মেসির জীবনি
মেসির পরিচয়.
নাম: লিওনেল আন্দ্রেস মেসি
নিক নাম : লিও মেসি
জম্ন তারিখ : ২৪ জুন ১৯৮৭
জম্ন স্থান : রোজারিও আর্জেন্টিনা
পৈতৃক নিবাস : ইতালির এনকোনা শহর
উচ্চতা : ৫ ফিট ৭ইঞ্চি
জাতীয়তা : আর্জেন্টিনা ও স্পেন দুই দেশের নাগরিক
ধর্ম : রোমান কেতলিক খ্রিষ্টান
প্রিয় দল : এফ সি বার্সেলোনা
ব্যলন ডি য়র : ৭টি
মেসির বাবা : হোর হে হোরাসি
মেসির মা: সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিতিন্নি
মেসির ২ ভাই ১ বোন
রদ্রিগো (ভাই)
মাতিয়াস (ভাই)
মারিয়া সেল (বোন)
মেসির বউ : এন্তোনেলা রোকজজো
মেসির ৩ ছেলে
তিয়াগো মেসি
মাতিয়া মেসি
সিরো মেসি
মেসির অর্থ সম্পদ: ৬০০ মিলিয়ন US৳ডলার
বাংলা টাকায় : ৪৭৩০ কোটি টাকা
মাসিক আয় : ১৭০ মিলিয়ন US ৳ডলার
স্পনসর আয় : ৭০ মিলিয়ন US৳ডলার
মেসি ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন রোজারিওতে পিতা হোরাসিও মেসি- একজন স্টিল ফ্যাক্টরি কর্মী এবং মাতা সেলিয়া ম্যারিয়া কাসিটিন একজন খন্ডকালীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মীর ঘরে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পৈত্রিক পরিবার অ্যানকোনার ইতালিয়ান শহর থেকে এসেছিলেন। তাঁর পূবপুরুষ ১৮৮৩ সালে আর্জেন্টিনায় অধিবাসী হয়ে এসেছিল। তাঁর দু'জন বড় ভাই আছেন রোগ্রিগো এবং ম্যাশিয়াস এবং একজন বোন ম্যারিয়া সোল। পাঁচ বছর বয়সে তাঁর বাবা জর্জের তত্ত্বাবধানে একটি স্থানীয় ক্লাব গ্রান্ডলির হয়ে মেসি ফুটবল খেলা শুরু করেন। এগারো বছর বয়সে রক্তে হরমোনের অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত হন।
চার্লস রেক্রাচ, এফসি বার্সোলনার ক্রীড়া পরিচালক অন্যতম একজন আত্নীয়ের মাধ্যমে তাঁর মেধার বিষয়টি জানতে পারেন। রেক্রাচ কোনো কাগজ হাতে না নিয়ে ন্যাপকিন পেপারে তাকে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। মেসি এবং তাঁর বাবা যথাসময়ে বার্সোলনার দিকে রওনা হন এবং সেখানে যুব ক্লাব একাডেমিতে মেসির নাম লেখা হয়।
মেসির পরিচয়..
নাম: লিওনেল আন্দ্রেস মেসি
নিক নাম : লিও মেসি
জম্ন তারিখ : ২৪ জুন ১৯৮৭
জম্ন স্থান : রোজারিও আর্জেন্টিনা
পৈতৃক নিবাস : ইতালির এনকোনা শহর
উচ্চতা : ৫ ফিট ৭ইঞ্চি
জাতীয়তা : আর্জেন্টিনা ও স্পেন দুই দেশের নাগরিক
ধর্ম : রোমান কেতলিক খ্রিষ্টান
প্রিয় দল : এফ সি বার্সেলোনা
ব্যলন ডি য়র : ৭টি
মেসির বাবা : হোর হে হোরাসি
মেসির মা: সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিতিন্নি
মেসির ২ ভাই ১ বোন
রদ্রিগো (ভাই)
মাতিয়াস (ভাই)
মারিয়া সেল (বোন)
মেসির বউ : এন্তোনেলা রোকজজো
মেসির ৩ ছেলে
তিয়াগো মেসি
মাতিয়া মেসি
সিরো মেসি
মেসির অর্থ সম্পদ: ৬০০ মিলিয়ন US৳ডলার
বাংলা টাকায় : ৪৭৩০ কোটি টাকা
মাসিক আয় : ১৭০ মিলিয়ন US ৳ডলার
স্পনসর আয় : ৭০ মিলিয়ন US৳ডলার
বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার রোজারিওতে স্টিল কারখানায় কর্মরত বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসি এবং পার্ট-টাইম ক্লিনার মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি এর ঘরে ১৯৮৭ সালের ২৪শে জুন জন্মগ্রহন করেন। তার পৈতৃক পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল ইতালির আকোনা শহরে। তার পূর্বপুরুষদের একজন অ্যাঞ্জেলো মেসি ১৮৮৩ সালে সেখান থেকে আর্জেন্টিনায় চলে আসেন। মেসির বড় দুই ভাই এবং এক ছোট বোন রয়েছেন।
বড় দুই ভাইয়ের নাম রদ্রিগো ও মাতিয়াস এবং ছোট বোনের নাম মারিয়া সল। পাঁচ বছর বয়সে মেসি স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে ফুটবল খেলা শুরু করেন যার কোচ ছিলেন তার বাবা হোর্হে।
✅ মেসির দ্য মেশিন অফ '৮৭ অর্জন:
১৯৯৫ সালে মেসি রোজারিও ভিত্তিক ক্লাব নিওয়েল’স ওল্ড বয়েজে যোগ দেন। একই সময় মেসি একটি স্থানীয় যুব শক্তিক্লাবের সদস্য হয়ে পড়েছিল যার ফলে এই ক্লাবটি পরবর্তী চার বছরে একটি মাত্র খেলায় পরাজিত হয়েছিল এবং স্থানীয়ভাবে মেসি “দ্য মেশিন অফ ‘৮৭” নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। তাকে “দ্য মেশিন অফ ‘৮৭” নামে ডাকার কারণটাও মজার। কারণ সেই সময় পরিচিত হয়ে ওঠা সবাইকেই তাদের জন্মসাল (১৯৮৭) সহ নাম দেয়া হত।
গ্রোথ হরমোনের সমস্যায় মেসির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত:
মেসির ছোট বেলা থেকেই ধ্যানজ্ঞান ছিল ফুটবল যার যার ফলে খুব সহজেই স্থানীয়ভাবে পরিচিতি পায় কিন্তু মাত্র ১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোনের সমস্যা ধরা পড়ে। স্থানীয় ক্লাব রিভার প্লেট মেসির প্রতি তাদের আগ্রহ দেখালেও সেসময় তারা মেসির চিকিত্সার খরচ বহন করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলনা। যার পরিমাণ ছিল প্রতি মাসে ৯০০ মার্কিন ডলার। যার ফলে মেসির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
✅ ন্যাপকিন পেপারে প্রথম চুক্তি সাক্ষর:
যখন মেসির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ঠিক ওই সময় বার্সেলোনার তত্কালীন ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস রেক্সাচ মেসির পাশে এসে দাড়ায় কারণ মেসির প্রতিভা সম্পর্কে জানতে পেরে তিনি মেসির খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। মেসির সাথে চুক্তির সময় হাতের কাছে কোন কাগজ না পেয়ে একটি ন্যাপকিন পেপারে তিনি মেসির বাবার সাথে চুক্তি সাক্ষর করেন। বার্সেলোনা মেসির চিকিত্সার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করতে রাজী হয়। এরপর মেসি এবং তার বাবা বার্সেলোনায় পাড়ি জমান। সেখানে মেসি বার্সেলোনার যুব একাডেমী লা মাসিয়াতে যোগ দিয়ে নতুন উদ্দীপনায় আবার তার খেলোয়াড় জীবন শুরু করে।
✅ বার্সেলোনা ক্লাবে মেসির যাত্রা:
মেসি ২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত বার্সেলোনার যুব একাডেমীর ইনফান্তিল বি, কাদেতে বি এবং কাদেতে এ দলে খেলেছেন। কাদেতে এ দলে খেলার সময় তিনি ৩০ খেলায় ৩৭ গোল করেন। ২০০৩ সালে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাকে ক্লাব থেকে প্রায় ছেড়েই দেওয়া হয়েছিল কিন্তু যুব দলের প্রশিক্ষণ কর্মীদের জোড়াজুড়িতে ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিষদ তাকে দলে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৩–০৪ মৌসুমে মেসি পাঁচটি আলাদা দলে খেলেন, যা একটি রেকর্ড। তিনি হুভেনিল বি দলে খেলে ১টি গোল করেন এবং হুভেনিল এ দলে খেলার সুযোগ লাভ করেন। সেখানে তিনি ১৪ খেলায় ২১টি গোল করেন। ২০০৩ সালের ২৯ নভেম্বর, বার্সেলোনা সি (তের্সেরা দিভিসিওন) দলে এবং ২০০৪ সালের ৬ মার্চ, বার্সেলোনা বি (সেহুন্দা দিভিসিওন) দলে তার অভিষেক হয়। ঐ মৌসুমে তিনি উভয় দলের হয়েই খেলেন এবং সি দলের হয়ে তার গোল সংখ্যা ছিল ১০ খেলায় ৫ এবং বি দলের হয়ে ৫ খেলায় শূন্য। এই দুই দলে অভিষেকের পূর্বে মেসির দাপ্তরিক অভিষেক হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৬ নভেম্বর, পোর্তোর বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় (১৬ বছর এবং ১৪৫ দিন বয়সে)।
✅ বার্সেলোনার তৃতীয় কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে মেসির লা লিগায় অভিষেক:
২০০৪ সালের ১৬ অক্টোবর, ইস্পানিওলের বিপক্ষে বার্সেলোনার তৃতীয় কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে মেসির লা লিগায় অভিষেক হয় (১৭ বছর এবং ১১৪ দিন বয়সে)। অবশ্য, ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে, বোয়ান কিরকিচ এই স্থান দখল করেন। ২০০৫ সালের ১ মে, আলবাকেতে বালোম্পাইয়ের বিপক্ষে বার্সেলোনার সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগায় গোল করার রেকর্ড গড়েন মেসি (১৭ বছর ১০ মাস এবং ৭ দিন বয়সে)। অবশ্য তার এই রেকর্ড ২০০৭ সালে বোয়ান কিরকিচ ভেঙ্গে ফেলেন। বোয়ান ঐ গোলটি মেসির পাস থেকেই করেছিলেন। মেসি তার প্রাক্তন কোচ ফ্রাংক রাইকার্ড সম্পর্কে বলেন: ‘আমি কখনও ভুলব না যে তিনি আমার ক্যারিয়ার শুরু করিয়েছিলেন, মাত্র ১৬ বা ১৭ বছর বয়সে আমার প্রতি তার আস্থা ছিল।’ ঐ মৌসুমে মেসি বার্সেলোনা বি দলের হয়েও খেলেন এবং ১৭ খেলায় ৬ গোল করেন।
✅ মেসিকে স্পেনের নাগরিকত্ব প্রদান এবং লা লিগা’য় খেলার সুযোগ:
২০০৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বারের মত বার্সেলোনা মেসির সাথে তাদের চুক্তি নবায়ন করে। এসময় মূল দলের খেলোয়াড় হিসেবে মেসির পারিশ্রমিক বাড়ানো হয় এবং চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৪ সাল পর্যন্ত করা হয়। ২০০৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর, মেসিকে স্পেনের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় এবং তিনি লা লিগায় খেলার সুযোগ পেয়ে যান। ২৭ সেপ্টেম্বর মেসি ঘরের মাঠে ইতালিয়ান ক্লাব উদিনেসের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লীগে তার প্রথম খেলায় মাঠে নামেন। মেসি যখন মাঠে নামেন তখন ক্যাম্প ন্যু এর দর্শকগন তাকে দাড়িয়ে অভ্যর্থনা জানান। মেসি লা লিগায় ১৭ খেলায় ৬ গোল এবং চ্যাম্পিয়নস লীগে ৬ খেলায় ১ গোল করেন। ২০০৬ সালের ৭ মার্চ চেলসির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লীগের দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় লীগের খেলায় মেসির ডান উরুর পেশী ছিঁড়ে যায়। ফলে সেসমই তাকে মৌসুমের ইতি টানতে হয়। ঐ মৌসুমে রাইকার্ডের অধীনে বার্সেলোনা স্পেন এবং ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মৌসুম শেষ করে।
✅ স্পেনের জাতীয় অনুর্ধ্ব ২০ ফুটবল দলে খেলার আমন্ত্রন প্রত্যাখ্যান মেসির:
আর্জেন্টাইন-স্পেনীয় নাগরিক হিসেবে ২০০৪ সালে মেসিকে স্পেনের জাতীয় অনুর্ধ্ব ২০ ফুটবল দলে খেলার জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়। কিন্তু মেসি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ২০০৪ সালের জুনে আর্জেন্টিনার অনুর্ধ্ব ২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি খেলায় মাঠে নামেন। তিনি ২০০৫ সালে দক্ষিন আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশীপে আর্জেন্টিনা দলের হয়ে খেলেন এবং যেখানে আর্জেন্টিনা তৃতীয় হয়। ২০০৫ ফিফা যুব চ্যাম্পিয়নশীপে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয় এবং তিনি ৬টি গোল করে প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল এবং গোল্ডেন বুটের পুরস্কার জিতেন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ‘এল ক্ল্যাসিকো’তে মেসির হ্যাট্রিক:
মেসি ২০০৬–০৭ মৌসুমে নিজেকে দলের নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে স্থাপন করে নেন এবং ২৬ খেলায় ১৪ গোল করেন। মেসি ১০ মার্চ এল ক্ল্যাসিকোতে হ্যাট্রিক করেন যার ফলে খেলাটি ৩–৩ গোল ড্র হয়। বার্সেলোনা খেলায় তিনবার পিছিয়ে পরলেও, প্রত্যেকবারই মেসি দলকে সমতায় ফেরান, যার মধ্যে একটি গোল তিনি দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে করেছিলেন। এর আগে এল ক্ল্যাসিকোতে সর্বশেষ হ্যাট্রিক করেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ইভান জামোরানো, ১৯৯৪–৯৫ মৌসুমে। অবশেষে ক্ল্যাসিকোতে হ্যাট্রিকের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটান মেসি এবং একই সাথে তিনি এল ক্ল্যাসিকোতে গোল করা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার এর খেতাব অর্জন করেন। মৌসুমের শেষের দিকে মেসি আগের চেয়ে আরও বেশি গোল করতে শুরু করেন। লীগে তার করা ১৪টি গোলের ১১টিই এসেছিল শেষ ১৩টি খেলা থেকে।
✅ ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপে মেসির খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল:
২০০৫–০৬ মৌসুমে ইনজুরির কারনে ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপে মেসির খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবুও মেসি দলে ডাক পান। বিশ্বকাপ শুরুর পূর্বে আর্জেন্টিনা অনুর্ধ্ব ২০ দলের বিপক্ষে সিনিয়র দলের হয়ে একটি খেলায় তিনি ১৫ মিনিট খেলেন এবং অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় ৬৪তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন। আইভরি কোস্টের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম খেলায় মেসি সাইড বেঞ্চে বসেছিলেন। পরের খেলায় সার্বিয়া এবং মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে খেলার ৭৪তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন মেসি এবং ৭৮তম মিনিটে হের্নান ক্রেসপোর একটি গোলে সহায়তা করেন। খেলার ৮৮তম মিনিটে মেসি একটি গোল করেন। এতে করে আর্জেন্টিনার সর্বকনিষ্ঠ এবং ইতিহাসের ৬ষ্ঠ কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। খেলায় আর্জেন্টিনা ৬–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।
নেদারল্যান্ড এর বিপক্ষে পরের খেলায় মেসি প্রথম দলে সুযোগ পান। খেলাটি ০–০ সমতায় শেষ হয়। মেক্সিকোর বিপক্ষে রাউন্ড ১৬ এর খেলায় ৮৪তম মিনিটে মেসি বদলি হিসেবে খেলতে নামেন। খেলায় উভয় দল তখন ১–১ গোলে সমতায় ছিল। খেলতে নেমেই তিনি একটি গোল করলেও তা অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। অতিরিক্ত সময়ে রদ্রিগুয়েজের গোলে আর্জেন্টিনা ২–১ ব্যবধানে জয় পায়। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে কোচ জোসে পেকারম্যান মেসিকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন। পেনাল্টি শুটআউটে ৪–২ ব্যবধানে আর্জেন্টিনা হেরে যায় এবং টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে।
✅ নতুন ‘ম্যারাডোনা’ রূপে মেসির আত্মপ্রকাশ:
মেসি ২০০৬–০৭ মৌসুমেই কিংবদন্তী দিয়েগো ম্যারাডোনার বিখ্যাত কিছু গোলের পুনরাবৃত্তি ঘটান এবং নিজেকে ‘নতুন ম্যারাডোনা’ রূপে প্রকাশ করেন। ২০০৭ সালের ১৮ এপ্রিলে কোপা দেল রে‘র সেমিফাইনালে খেতাফের বিপক্ষে মেসি জোড়া গোল করেন। যার মধ্যে একটি গোল ছিল ম্যারাডোনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা দ্বিতীয় গোলটির মত, যে গোলটি শতাব্দীর সেরা গোল হিসেবে খ্যাত। বিশ্বের ক্রীড়া মাধ্যম মেসিকে ম্যারাডোনার সাথে তুলনা করতে শুরু করে এবং স্পেনীয় সংবাদ মাধ্যম তাকে ‘মেসিডোনা’ উপাধিতে ভূষিত করে। ম্যারাডোনার মত মেসিও প্রায় ৬২ মিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে গোলরক্ষকসহ ছয় জনকে কাটিয়ে একই স্থান থেকে গোল করেছিলেন এবং কর্ণার ফ্লাগের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন। ২১ বছর আগে মেক্সিকো বিশ্বকাপে যেমনটি করেছিলেন ম্যারাডোনা। ইস্পানিওলের বিপক্ষেও মেসি একটি গোল করেছিলেন যা ছিল ম্যারাডোনার ‘হ্যান্ড অব গড’ খ্যাত গোলটির মত। যেটি ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যারাডোনার করা প্রথম গোল ছিল।
✅ বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন:
২০০৭ সালে স্পেনীয় সংবাদপত্র মার্কা তাদের অনলাইন সংস্করনে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের জন্য ভোটের আয়োজন করে যেখানে মেসি ৭৭ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম হন। বার্সেলোনা ভিত্তিক সংবাদপত্র এল মুন্দো দেপোর্তিভো এবং দেইলি স্পোর্ত সে বছর ‘ব্যালোন ডি’অর’ মেসিকে দেওয়ার জন্য দাবি করে। ফ্রাঞ্চেসকো তোত্তি’র মত ফুটবল ব্যক্তিত্ব মেসিকে বর্তমান সময়ের সেরা ফুটবলার হিসেবে ব্যক্ত করেন। ২০০৭ সালের ‘ব্যালোন ডু’অর’ পুরষ্কারে মেসি তৃতীয় হন এবং ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরষ্কারে তিনি দ্বিতীয় হন।
✅ আবার ইনজুরিতে মেসি:
২০০৭–০৮ মৌসুমে সেল্টিকের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলায় মেসি বাম পায়ের মাংস পেশীর ইনজুরিতে আক্রান্ত হন এবং ছয় সপ্তাহের জন্য মাঠের বাহিরে চলে যান। তিনটি মৌসুমে চতুর্থবারের মত মেসি একই ধরনের ইনজুরিতে আক্রান্ত হন। যদিও তার আগে এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসি ৬ গোল করেন এবং ১টি গোলে সহায়তা করেন। যদিও বার্সেলোনা সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরে বিদায় নেয়। মৌসুমে মেসি বার্সেলোনার হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ১৬ গোল করেন এবং ১৩টি গোলে সহায়তা করেন।
✅ মেসির ১০ নম্বর জার্সি অর্জন:
রোনালদিনিয়ো’র প্রস্থানের পর মেসি তার ১০ নম্বর জার্সি পেয়ে যান। এই মৌসুমে মেসি ২০০৮ ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার-এর পুরস্কারে ৬৭৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে কোপা দেল রে’র একটি খেলায় মেসি ২০০৯ সালে তার প্রথম হ্যাট্রিক করেন। খেলায় বার্সেলোনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ২০০৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, মেসি রেসিং স্যান্তেনদার এর বিপক্ষে খেলার দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমে জোড়া গোল করেন। ঐ খেলায় ১–০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও মেসির কর্তৃত্বে বার্সেলোনা ১–২ ব্যবধানে জয় লাভ করে।
✅ ‘ফলস নাইন’ পজিশনে মেসি:
২০০৯ সালের উয়েফা সুপার কাপ জেতার পর বার্সেলোনা ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা মেসিকে ডান উইঙ্গ থেকে সরিয়ে ‘ফলস নাইন’ পজিশনে নিয়ে আসেন। কারণ এর আগে বার্সেলোনার পূর্বের ম্যানেজার ফ্রাংক রাইকার্ড মেসিকে মাঠের বাম পার্শ্ব হতে ডান উইঙ্গে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যেন মেসি সহজে মাঠের মাঝখানে প্রবেশ করতে পারেন এবং বাম পা দিয়ে শট বা ক্রস করতে পারেন। কিন্তু প্রাথমিকভাবে এটি মেসির ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছিল।
✅ ‘ব্যালন ডি’অর’ এর ইতিহাসে মেসির সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড
মেসি ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বার্সেলোনার সাথে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হন। এই চুক্তির সময় মেসির মূল্য রাখা হয় ২৫০ মিলিয়ন ইউরো এবং এই চুক্তির মাধ্যমে মেসির বার্ষিক আয় বেড়ে দাড়ায় ৯.৫ মিলিয়ন ইউরো। একই বছর ১ ডিসেম্বর ব্যালন ডি’অর বিজয়ী হিসেবে মেসির নাম ঘোষনা করা হয়। এবারের ব্যালন ডি’অর পুরষ্কারে মেসি ৪৭৩ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ২৩৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় হন। এটি ছিল ব্যালন ডি’অর এর ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। একই সময় মেসি আইএফএফএইচএস বর্ষসেরা প্লেমেকার পুরস্কারে দ্বিতীয় হন।
✅ প্রথম আজেন্টাইন হিসেবে মেসির ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার অর্জন:
মেসি ১৯ ডিসেম্বর ২০০৯ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে এস্তুদিয়ান্তেসের বিপক্ষে গোল করে দলকে শিরোপা এনে দেন এবং ঐ বছর ৬টি শিরোপা এনে দেন তার দলকে। এর দুই দিন পরই তাকে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দেয়া হয়। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, জাভি হার্নান্দেজ, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা এবং কাকা-কে হারিয়ে মেসি এই পুরস্কার জিতেন। তিনিই প্রথম আজেন্টাইন হিসেব এই পুরস্কার জেতার কৃতিত্ব অর্জন করেন। ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার অর্জনের পরপরি মেসি ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি ২০০৯–১০ মৌসুমের তার প্রথম হ্যাট্রিক করেন এবং বার্সেলোনা ৫-০ ব্যবধানে টেনেরিফের বিপক্ষে জয় লাভ করে এবং ১৭ জানুয়ারি মেসি বার্সেলোনার হয়ে তার ১০০ তম গোলটি করেন যার ফলে বার্সেলোনা সেভিয়ার বিপক্ষে ৪–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।
✅ ২০১০ বিশ্বকাপে মেসির ১০ নম্বর জার্সি:
মেসি ২০১০ বিশ্বকাপে ১০ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামেন। এই প্রথম বড় কোন প্রতিযোগীতায় তিনি ১০ নম্বর জার্সি পরে নামেন। বিশ্বকাপের প্রথম খেলায়, নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলার পুরোটা সময়ই তিনি মাঠে ছিলেন। তিনি গোল করার অনেকগুলো সুযোগ তৈরি করেছিলেন কিন্তু তার সবকয়টি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন নাইজেরিয়ান গোলরক্ষক ভিনসেন্ট এনইয়েমা। খেলায় আর্জেন্টিনা ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। পরের খেলায় কোরিয়া রিপাবলিকের বিপক্ষে মেসি মাঠে নামেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৪–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। মারাদোনার অধীনে তিনি মূলত একজন আক্রমনাত্মক মাঝমাঠের খেলোয়াড় বা প্লেমেকার হিসেবে খেলেছিলেন। খেলার সবকটি গোলেই তার ভূমিকা ছিল। তার সহায়তায় গঞ্জালো হিগুয়েইন খেলায় হ্যাট্রিক করেন।
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার তৃতীয় ও গ্রুপ পর্বের শেষ খেলায় গ্রীসের বিপক্ষে মেসি অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ২–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। কোন গোল না করলেও এই জয়ে মেসির বড় ভূমিকা ছিল, যার ফলে তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়। রাউন্ড ১৬ তে মেক্সিকোর বিপক্ষে খেলায় কার্লোস তেভেজর একটি গোলে মেসি সহায়তা করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ৩–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৪–০ ব্যবধানে হেরে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়। প্রতিযোগীতার গোল্ডেন বল পুরষ্কারের জন্য ১০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় মেসি জায়গা পান। ফিফার টেকনিক্যাল গবেষনা দল মেসির সক্ষমতা সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে বলে, ‘‘অসাধারন গতি, দলের জন্য সৃজনশীলতা, ড্রিবলিং, শুটিং, পাসিং এ সবগুলোতেই তিনি দক্ষ এবং দর্শনীয়।’’
ব্যক্তিজীবনে এক পুত্রের পিতা মেসি যে শুধু খেলা নিয়েই ব্যস্ত তা নয় বরং নিজের অবস্থানের সামাজিক দায়বদ্ধতা উপলব্ধি করেই মেসি ইউনিসেফ এর শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়াও শিশুদের শিক্ষা ও খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করতে চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের দাতব্য সংস্থা, অবদান রাখছেন আর্জেন্টিনার চিকিৎসা ক্ষেত্রেও।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এ সর্বোচ্চ গোলদাতার খাতায় মান উঠলেও রয়ে গেছে বিশাল এক অতৃপ্তি, এখনো মেসি স্বাদ পাননি বিশ্বকাপ ট্রফির। আর তাই বলায় যায়, মেসি সাফল্যের শিখরে অবস্থান করলেও বিশ্বকাপ ট্রফিই হবে মেসির মুকুটে বিশালতার শ্রেষ্ঠ চিহ্ন। এখন অপেক্ষা মাত্র কয়েকটি দিনের, দেখা যাক এই বিশ্বকাপেই সেই সেরা মুহুর্তের দেখা বিশ্ববাসী পান কিনা।
লিওনেল মেসির সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ার:
নামঃ লিওনেল আন্দ্রেস মেসি
জন্মঃ ২৪জুন ১৯৮৭
জন্মস্থানঃ রোসারিও, আর্জেন্টিনা
উচ্চতাঃ ৫ ফুট ৭ ইঞ্চ
খেলার অবস্থানঃ ফরোয়ার্ড
অর্জন: অলিম্পিক গোল্ড মেডেল ২০০৮, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০১১, ফিফা ব্যালন ডি’অর ২০০৯, ২০১০, ২০১১,২০১২। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা ৩ বার, লা লিগা প্লেয়ার ফ দ্যা ইয়ার ২০০৯,১০,১১।
রেকর্ড: অফিশিয়াল ম্যাচে সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক ২৬ টি,লা লিগায় সবেচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক ১৯ টি। এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল ৯১টি। জাতীয় দলের হয়ে এক বছরে সবচেয়ে বেশি গোল ১২ , লা লিগায় এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক ৮ টি। এক ক্লাবের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল ৩৫৪*
গোল: আর্জেন্টিনার হয়ে ৮৩ ম্যাচে ৩৭ গোল।
আর্জেন্টিনার হয়ে অর্জন: ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ শিরোপা, অলিম্পিক গোল্ড মেডেল ২০০৮, কোপা আমেরিকা রানার আপ ২০০৭।
মেসির জীবন কাহিনী:
আমাকে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছিল যখন আমি আর্জেন্টিনা ছেড়ে, আমার পরিবার ছেড়ে একটা নতুন জীবন শুরু করার উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু আমি যা কিছু করেছিলাম শুধুমাত্র ফুটবলের জন্য। আমার স্বপ্নকে পূরণ করতে।
এই কারণেই আমি অত বেশি পার্টি বা অন্যান্য মজার জিনিস গুলো করে বেড়াই না। এখনো পর্যন্ত তার সব থেকে বেশি আবেগপ্রবণ সাক্ষাৎকারে বার্সেলোনার সেই ছোট তারকাটি বলেছিলেন, যে ঠিক কতটা কষ্ট সহ্য করেও সে তার পরিবারকে ছেড়ে, সমস্ত বন্ধুদের কে ছেড়ে, সমস্ত ইনভাইটেশনকে না করে সে বিদেশ চলে এসেছিল একটা নতুন জীবন শুরু করতে।
এত ছোট বয়সেও সে এত বড় একটা ডিসিশন নিয়েছিল। কারণ একদম ছোটবেলা থেকেই তার লক্ষ্য সম্পূর্ণ পরিষ্কার ছিল। সে সব দিনই চেয়েছিল একজন মহান ফুটবলার হতে। আর অন্য কোনো কিছুই তার কাছে তার জীবনে কোনদিনই এর থেকে বেশি মূল্যবান ছিল না।
✅ অনুপ্রেরণা ১: নিজের প্যাশনে দৃঢ় হওয়া
আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই হয়তো এটা জানেন, যে মাত্র ১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি রোগ ধরা পড়ে। লোকাল পাওয়ার হাউস, রিভার প্লেট তার প্রগ্রেস এর প্রতি ইন্টারেস্টেড ছিল। কিন্তু তারা তার চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে জরুরি ৯০০ ডলার খরচ করতে রাজি ছিল না।
কার্লস রেসজ্যাগ যিনি সেই সময় এফ সি বার্সেলোনার স্পোটিং ডিরেক্টর ছিলেন। সৌভাগ্যবশত মেসির ট্যালেন্ট সম্পর্কে অবগত হন। কারণ ওয়েস্টার্ন ক্যাটালোনিয়া লিডাতে তার কয়েকজন আত্মীয় ছিলেন। যার ফলে মেসি এবং তার বাবা এফ সি বার্সেলোনা টিমের সাথে একটা ট্রায়াল অ্যারেঞ্জ করতে সফল হন।
১৩ বছর বয়সীও মেসি একটা ইউজ ন্যাপকিনে বার্সেলোনার সাথে তার প্রথম কন্ট্রাক্ট সাইন করেন। কারণ সে এতটাই উৎসাহিত ছিল যে, সে চেয়েছিল ডিনারটা শেষ হওয়ার আগেই যেন তাকে সাইন করিয়ে নেওয়া হয়। যে কারণে স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লস রেসজ্যাগ তখনই সেস্টূর্যান্ট এর ওয়েটারকে ডাক দেন।
তার কাছ থেকে একটা ন্যাপকিন নিয়ে তাতে একটা কন্ট্রাক্ট লিখে ফেলেন। যে ন্যাপকিনটা এখন মেসির উকিলের অফিসে ঝোলানো রয়েছে। যেটাকে বর্তমানে মোস্ট সেলিব্রেটেড পেপার ন্যাপকিন হিসেবে গণ্য করা হয়।
✅ অনুপ্রেরণা ২: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়
রাশিয়ান ক্লাব একবার মেসিকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ইউরো দিয়ে এবং আড়াইশো মিলিয়ান ইউরো দাম দিয়ে কেনার অফার করে। কিন্তু মেসি তা রিজেক্ট করে দেন। ওনার একটি সাক্ষাতকারে ওনি বলেন, “বার্সেলোনা আমার প্রান। বার্সেলোনাই আজ আমি যেখানে পৌঁছেছি সেখানে আমায় পৌঁছে দিয়েছে।
আমি বার্সেলোনা ছেড়ে যেতে পারবনা। আমি চাইও না কোনদিন ছেড়ে যেতে। আমি জানি প্রিমিয়ার লিগ অনেক ভালো। কিন্তু আমি কোনদিন ইংল্যান্ডে খেলার কথা ভাবতে পারি না। কারণ আমার হৃদয় সবসময় বার্সেলোনাতেই পড়ে থাকবে।”
মেসির ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাটা যে ঠিক কতটা গভীর তা ভাষায় প্রকাশ করা হয়তো ভীষণই মুশকিল। ওনি একবার বলেছিলেন, “টাকা আমার কাছে কোনদিনই অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল না। টাকা আমাকে কোনদিনই অনুপ্রেরণা যোগায় না। আমাকে আরো ভালো খেলতে কোনোভাবেই উৎসাহিত করে না।
কারণ হতে পারে হয়তো ধনী হওয়ার অনেক বেশি বেনিফিট রয়েছে। কিন্তু আমি শুধুমাত্র আমার পায়ে একটা ফুটবল থাকলেই খুশি। আমার অনুপ্রেরণা আসে খেলাটা থেকে, যে খেলাটাকে আমি এতটা ভালবাসি। যদি আমি একজন প্রফেশনাল ফুটবলার নাও হতাম, তাও আমি কোন কিছু ছাড়াই সারা জীবন ফুটবল খেলে যেতাম। মেসির জীবন কাহিনী এই একটা বিষয়ে আরো জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফুটবল প্রেমীদের কাছে।
✅ অনুপ্রেরণা ৩: নিজের কাজকে ভালবাসা
হ্যা এটা সত্যি যে, মেসি অন্যান্য গ্রেট ফুটবলারদের মত অতটা লম্বাও নন, অতটা স্বাস্থ্যও ভালো না। কিন্তু তবু লিও মেসি সারা বিশ্বের সামনে একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ হিসেবে গিয়ে এসেছেন। প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র স্বাস্থ্য শরীরই না সেটা ছাড়াও যেটা অনেক বেশি জরুরী সেটা হল অদম্য মানসিক শক্তি।
তো যদি কখনো আপনার এরকম মনে হয়, যে আপনি হয়তো বেটে বা আপনার স্বাস্থ্য শরীর ভালো না বা আপনাকে দেখতে হয়ত কোন সিনেমার হিরোর মত না। তাহলে তখন একবার শুধু মেসির দিকে তাকান। যদি সে তার নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে তাহলে আমি কোন কারণই খুঁজে পাচ্ছি না যে আপনি কেন আপনার স্বপ্নটা পূরণ করতে পারবেন না।
একবার মেসি বলেছিলেন, আমার হাতে এখনো অনেক বছর পরে রয়েছে আরো ভালো আরো বেটার হওয়ার জন্য। সেটাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। যেদিন কোন খেলোয়াড়ের মনে হবে তার ইম্প্রূভ করার আর কিছুই বাকি নেই আমার মতে সেই দিনটি যে কোন খেলোয়াড়ের জন্য সবথেকে বড় দুঃখের দিন। তার ঠিক এই মনোভাবটিই তাকে প্রতিনিয়ত আরো ভালো হয়ে উঠতে সাহায্য করছে।
✅ অনুপ্রেরণা ৪: নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা
মেসি তার সেটব্যাকগুলোকে ব্যবহার করেন মোস্ট রিমার্কেবল কামব্যাক হিসেবে গড়ে তুলতে। যদি কখনো আপনার মনে হয় আপনি আপনার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ করতে পারবেন না তখন শুধু একবার এইটুকু ভাবুন, যে আপনি কেন শুরু করেছিলেন? আর তারপর যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছাছেন ততক্ষণ অব্দি যুদ্ধ চালিয়ে যান।
এটা হয়তো ফুটবলের ভগবানের কাছে থেকে শেখা সব থেকে বেশি ভালো একটা লাইফ লেসন। ঠিক এটাই মেসি করেছিলেন। তিনি তার স্বপ্ন পূরণের জন্য শেষ অব্দি যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলেন।
তার আর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “তৈরি থাকো তোমাকে তোমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অনেক যুদ্ধের মোকাবিলা করতে হবে। তোমাকে অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”
✅ অনুপ্রেরণা ৫: হাল না ছাড়া
আমরা তাকে নিয়ে অনেক কিছু বলেছি। খবরের কাগজের হেডলাইনে তাকে অবিশ্বাস্য, অতুলনীয়, অদ্বিতীয়, আশ্চর্য থেকে শুরু করে মেসি হলেন ফুটবলের ভগবান। এই অব্দিও বলা হয়েছে। এক্স বাসেলোনা কোচ পেপ গোর্ডেলিও একবার বলেছিলেন, “তার ব্যাপারে কিছু লিখে লাভ নেই। তাকে বর্ণনা করার চেষ্টা করাও বৃথা। শুধু তার খেলাটা দেখুন। আর উপভোগ করুন।”
মেসির জীবন কাহিনী লেখাটি নিজের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন স্পেশালি তাদের সাথে যারা মেসির খুব বড় ভক্ত। কমেন্ট করে আমাদেরকে জানান নেক্সট কার জীবনের উপর আপনি জিরো টু হিরো লেখা দেখতে চান। কারণ আপনাকে সাহায্য করতে পারাটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য।
মেসির জীবন কাহিনী:
আমাকে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছিল যখন আমি আর্জেন্টিনা ছেড়ে, আমার পরিবার ছেড়ে একটা নতুন জীবন শুরু করার উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু আমি যা কিছু করেছিলাম শুধুমাত্র ফুটবলের জন্য। আমার স্বপ্নকে পূরণ করতে।
এই কারণেই আমি অত বেশি পার্টি বা অন্যান্য মজার জিনিস গুলো করে বেড়াই না। এখনো পর্যন্ত তার সব থেকে বেশি আবেগপ্রবণ সাক্ষাৎকারে বার্সেলোনার সেই ছোট তারকাটি বলেছিলেন, যে ঠিক কতটা কষ্ট সহ্য করেও সে তার পরিবারকে ছেড়ে, সমস্ত বন্ধুদের কে ছেড়ে, সমস্ত ইনভাইটেশনকে না করে সে বিদেশ চলে এসেছিল একটা নতুন জীবন শুরু করতে।
এত ছোট বয়সেও সে এত বড় একটা ডিসিশন নিয়েছিল। কারণ একদম ছোটবেলা থেকেই তার লক্ষ্য সম্পূর্ণ পরিষ্কার ছিল। সে সব দিনই চেয়েছিল একজন মহান ফুটবলার হতে। আর অন্য কোনো কিছুই তার কাছে তার জীবনে কোনদিনই এর থেকে বেশি মূল্যবান ছিল না।
✅ অনুপ্রেরণা ১: নিজের প্যাশনে দৃঢ় হওয়া
আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই হয়তো এটা জানেন, যে মাত্র ১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি রোগ ধরা পড়ে। লোকাল পাওয়ার হাউস, রিভার প্লেট তার প্রগ্রেস এর প্রতি ইন্টারেস্টেড ছিল। কিন্তু তারা তার চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে জরুরি ৯০০ ডলার খরচ করতে রাজি ছিল না।
কার্লস রেসজ্যাগ যিনি সেই সময় এফ সি বার্সেলোনার স্পোটিং ডিরেক্টর ছিলেন। সৌভাগ্যবশত মেসির ট্যালেন্ট সম্পর্কে অবগত হন। কারণ ওয়েস্টার্ন ক্যাটালোনিয়া লিডাতে তার কয়েকজন আত্মীয় ছিলেন। যার ফলে মেসি এবং তার বাবা এফ সি বার্সেলোনা টিমের সাথে একটা ট্রায়াল অ্যারেঞ্জ করতে সফল হন।
১৩ বছর বয়সীও মেসি একটা ইউজ ন্যাপকিনে বার্সেলোনার সাথে তার প্রথম কন্ট্রাক্ট সাইন করেন। কারণ সে এতটাই উৎসাহিত ছিল যে, সে চেয়েছিল ডিনারটা শেষ হওয়ার আগেই যেন তাকে সাইন করিয়ে নেওয়া হয়। যে কারণে স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লস রেসজ্যাগ তখনই সেস্টূর্যান্ট এর ওয়েটারকে ডাক দেন।
তার কাছ থেকে একটা ন্যাপকিন নিয়ে তাতে একটা কন্ট্রাক্ট লিখে ফেলেন। যে ন্যাপকিনটা এখন মেসির উকিলের অফিসে ঝোলানো রয়েছে। যেটাকে বর্তমানে মোস্ট সেলিব্রেটেড পেপার ন্যাপকিন হিসেবে গণ্য করা হয়।
✅ অনুপ্রেরণা ২: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়
রাশিয়ান ক্লাব একবার মেসিকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ইউরো দিয়ে এবং আড়াইশো মিলিয়ান ইউরো দাম দিয়ে কেনার অফার করে। কিন্তু মেসি তা রিজেক্ট করে দেন। ওনার একটি সাক্ষাতকারে ওনি বলেন, “বার্সেলোনা আমার প্রান। বার্সেলোনাই আজ আমি যেখানে পৌঁছেছি সেখানে আমায় পৌঁছে দিয়েছে।
আমি বার্সেলোনা ছেড়ে যেতে পারবনা। আমি চাইও না কোনদিন ছেড়ে যেতে। আমি জানি প্রিমিয়ার লিগ অনেক ভালো। কিন্তু আমি কোনদিন ইংল্যান্ডে খেলার কথা ভাবতে পারি না। কারণ আমার হৃদয় সবসময় বার্সেলোনাতেই পড়ে থাকবে।”
মেসির ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাটা যে ঠিক কতটা গভীর তা ভাষায় প্রকাশ করা হয়তো ভীষণই মুশকিল। ওনি একবার বলেছিলেন, “টাকা আমার কাছে কোনদিনই অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল না। টাকা আমাকে কোনদিনই অনুপ্রেরণা যোগায় না। আমাকে আরো ভালো খেলতে কোনোভাবেই উৎসাহিত করে না।
কারণ হতে পারে হয়তো ধনী হওয়ার অনেক বেশি বেনিফিট রয়েছে। কিন্তু আমি শুধুমাত্র আমার পায়ে একটা ফুটবল থাকলেই খুশি। আমার অনুপ্রেরণা আসে খেলাটা থেকে, যে খেলাটাকে আমি এতটা ভালবাসি। যদি আমি একজন প্রফেশনাল ফুটবলার নাও হতাম, তাও আমি কোন কিছু ছাড়াই সারা জীবন ফুটবল খেলে যেতাম। মেসির জীবন কাহিনী এই একটা বিষয়ে আরো জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফুটবল প্রেমীদের কাছে।
✅ অনুপ্রেরণা ৩: নিজের কাজকে ভালবাসা
হ্যা এটা সত্যি যে, মেসি অন্যান্য গ্রেট ফুটবলারদের মত অতটা লম্বাও নন, অতটা স্বাস্থ্যও ভালো না। কিন্তু তবু লিও মেসি সারা বিশ্বের সামনে একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ হিসেবে গিয়ে এসেছেন। প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র স্বাস্থ্য শরীরই না সেটা ছাড়াও যেটা অনেক বেশি জরুরী সেটা হল অদম্য মানসিক শক্তি।
তো যদি কখনো আপনার এরকম মনে হয়, যে আপনি হয়তো বেটে বা আপনার স্বাস্থ্য শরীর ভালো না বা আপনাকে দেখতে হয়ত কোন সিনেমার হিরোর মত না। তাহলে তখন একবার শুধু মেসির দিকে তাকান। যদি সে তার নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে তাহলে আমি কোন কারণই খুঁজে পাচ্ছি না যে আপনি কেন আপনার স্বপ্নটা পূরণ করতে পারবেন না।
একবার মেসি বলেছিলেন, আমার হাতে এখনো অনেক বছর পরে রয়েছে আরো ভালো আরো বেটার হওয়ার জন্য। সেটাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। যেদিন কোন খেলোয়াড়ের মনে হবে তার ইম্প্রূভ করার আর কিছুই বাকি নেই আমার মতে সেই দিনটি যে কোন খেলোয়াড়ের জন্য সবথেকে বড় দুঃখের দিন। তার ঠিক এই মনোভাবটিই তাকে প্রতিনিয়ত আরো ভালো হয়ে উঠতে সাহায্য করছে।
✅ অনুপ্রেরণা ৪: নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা
মেসি তার সেটব্যাকগুলোকে ব্যবহার করেন মোস্ট রিমার্কেবল কামব্যাক হিসেবে গড়ে তুলতে। যদি কখনো আপনার মনে হয় আপনি আপনার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ করতে পারবেন না তখন শুধু একবার এইটুকু ভাবুন, যে আপনি কেন শুরু করেছিলেন? আর তারপর যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছাছেন ততক্ষণ অব্দি যুদ্ধ চালিয়ে যান।
এটা হয়তো ফুটবলের ভগবানের কাছে থেকে শেখা সব থেকে বেশি ভালো একটা লাইফ লেসন। ঠিক এটাই মেসি করেছিলেন। তিনি তার স্বপ্ন পূরণের জন্য শেষ অব্দি যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলেন।
তার আর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “তৈরি থাকো তোমাকে তোমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অনেক যুদ্ধের মোকাবিলা করতে হবে। তোমাকে অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”
✅ অনুপ্রেরণা ৫: হাল না ছাড়া
আমরা তাকে নিয়ে অনেক কিছু বলেছি। খবরের কাগজের হেডলাইনে তাকে অবিশ্বাস্য, অতুলনীয়, অদ্বিতীয়, আশ্চর্য থেকে শুরু করে মেসি হলেন ফুটবলের ভগবান। এই অব্দিও বলা হয়েছে। এক্স বাসেলোনা কোচ পেপ গোর্ডেলিও একবার বলেছিলেন, “তার ব্যাপারে কিছু লিখে লাভ নেই। তাকে বর্ণনা করার চেষ্টা করাও বৃথা। শুধু তার খেলাটা দেখুন। আর উপভোগ করুন।”
মেসির জীবন কাহিনী লেখাটি নিজের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন স্পেশালি তাদের সাথে যারা মেসির খুব বড় ভক্ত। কমেন্ট করে আমাদেরকে জানান নেক্সট কার জীবনের উপর আপনি জিরো টু হিরো লেখা দেখতে চান। কারণ আপনাকে সাহায্য করতে পারাটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য।
মেসির জীবন কাহিনী:
আমাকে অনেক কিছু স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছিল যখন আমি আর্জেন্টিনা ছেড়ে, আমার পরিবার ছেড়ে একটা নতুন জীবন শুরু করার উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু আমি যা কিছু করেছিলাম শুধুমাত্র ফুটবলের জন্য। আমার স্বপ্নকে পূরণ করতে।
এই কারণেই আমি অত বেশি পার্টি বা অন্যান্য মজার জিনিস গুলো করে বেড়াই না। এখনো পর্যন্ত তার সব থেকে বেশি আবেগপ্রবণ সাক্ষাৎকারে বার্সেলোনার সেই ছোট তারকাটি বলেছিলেন, যে ঠিক কতটা কষ্ট সহ্য করেও সে তার পরিবারকে ছেড়ে, সমস্ত বন্ধুদের কে ছেড়ে, সমস্ত ইনভাইটেশনকে না করে সে বিদেশ চলে এসেছিল একটা নতুন জীবন শুরু করতে।
এত ছোট বয়সেও সে এত বড় একটা ডিসিশন নিয়েছিল। কারণ একদম ছোটবেলা থেকেই তার লক্ষ্য সম্পূর্ণ পরিষ্কার ছিল। সে সব দিনই চেয়েছিল একজন মহান ফুটবলার হতে। আর অন্য কোনো কিছুই তার কাছে তার জীবনে কোনদিনই এর থেকে বেশি মূল্যবান ছিল না।
✅ অনুপ্রেরণা ১: নিজের প্যাশনে দৃঢ় হওয়া
আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই হয়তো এটা জানেন, যে মাত্র ১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি রোগ ধরা পড়ে। লোকাল পাওয়ার হাউস, রিভার প্লেট তার প্রগ্রেস এর প্রতি ইন্টারেস্টেড ছিল। কিন্তু তারা তার চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে জরুরি ৯০০ ডলার খরচ করতে রাজি ছিল না।
কার্লস রেসজ্যাগ যিনি সেই সময় এফ সি বার্সেলোনার স্পোটিং ডিরেক্টর ছিলেন। সৌভাগ্যবশত মেসির ট্যালেন্ট সম্পর্কে অবগত হন। কারণ ওয়েস্টার্ন ক্যাটালোনিয়া লিডাতে তার কয়েকজন আত্মীয় ছিলেন। যার ফলে মেসি এবং তার বাবা এফ সি বার্সেলোনা টিমের সাথে একটা ট্রায়াল অ্যারেঞ্জ করতে সফল হন।
১৩ বছর বয়সীও মেসি একটা ইউজ ন্যাপকিনে বার্সেলোনার সাথে তার প্রথম কন্ট্রাক্ট সাইন করেন। কারণ সে এতটাই উৎসাহিত ছিল যে, সে চেয়েছিল ডিনারটা শেষ হওয়ার আগেই যেন তাকে সাইন করিয়ে নেওয়া হয়। যে কারণে স্পোর্টিং ডিরেক্টর কার্লস রেসজ্যাগ তখনই সেস্টূর্যান্ট এর ওয়েটারকে ডাক দেন।
তার কাছ থেকে একটা ন্যাপকিন নিয়ে তাতে একটা কন্ট্রাক্ট লিখে ফেলেন। যে ন্যাপকিনটা এখন মেসির উকিলের অফিসে ঝোলানো রয়েছে। যেটাকে বর্তমানে মোস্ট সেলিব্রেটেড পেপার ন্যাপকিন হিসেবে গণ্য করা হয়।
✅ অনুপ্রেরণা ২: ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়
রাশিয়ান ক্লাব একবার মেসিকে ৩০ মিলিয়ন ডলার ইউরো দিয়ে এবং আড়াইশো মিলিয়ান ইউরো দাম দিয়ে কেনার অফার করে। কিন্তু মেসি তা রিজেক্ট করে দেন। ওনার একটি সাক্ষাতকারে ওনি বলেন, “বার্সেলোনা আমার প্রান। বার্সেলোনাই আজ আমি যেখানে পৌঁছেছি সেখানে আমায় পৌঁছে দিয়েছে।
আমি বার্সেলোনা ছেড়ে যেতে পারবনা। আমি চাইও না কোনদিন ছেড়ে যেতে। আমি জানি প্রিমিয়ার লিগ অনেক ভালো। কিন্তু আমি কোনদিন ইংল্যান্ডে খেলার কথা ভাবতে পারি না। কারণ আমার হৃদয় সবসময় বার্সেলোনাতেই পড়ে থাকবে।”
মেসির ফুটবলের প্রতি ভালোবাসাটা যে ঠিক কতটা গভীর তা ভাষায় প্রকাশ করা হয়তো ভীষণই মুশকিল। ওনি একবার বলেছিলেন, “টাকা আমার কাছে কোনদিনই অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল না। টাকা আমাকে কোনদিনই অনুপ্রেরণা যোগায় না। আমাকে আরো ভালো খেলতে কোনোভাবেই উৎসাহিত করে না।
কারণ হতে পারে হয়তো ধনী হওয়ার অনেক বেশি বেনিফিট রয়েছে। কিন্তু আমি শুধুমাত্র আমার পায়ে একটা ফুটবল থাকলেই খুশি। আমার অনুপ্রেরণা আসে খেলাটা থেকে, যে খেলাটাকে আমি এতটা ভালবাসি। যদি আমি একজন প্রফেশনাল ফুটবলার নাও হতাম, তাও আমি কোন কিছু ছাড়াই সারা জীবন ফুটবল খেলে যেতাম। মেসির জীবন কাহিনী এই একটা বিষয়ে আরো জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফুটবল প্রেমীদের কাছে।
✅ অনুপ্রেরণা ৩: নিজের কাজকে ভালবাসা
হ্যা এটা সত্যি যে, মেসি অন্যান্য গ্রেট ফুটবলারদের মত অতটা লম্বাও নন, অতটা স্বাস্থ্যও ভালো না। কিন্তু তবু লিও মেসি সারা বিশ্বের সামনে একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ হিসেবে গিয়ে এসেছেন। প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র স্বাস্থ্য শরীরই না সেটা ছাড়াও যেটা অনেক বেশি জরুরী সেটা হল অদম্য মানসিক শক্তি।
তো যদি কখনো আপনার এরকম মনে হয়, যে আপনি হয়তো বেটে বা আপনার স্বাস্থ্য শরীর ভালো না বা আপনাকে দেখতে হয়ত কোন সিনেমার হিরোর মত না। তাহলে তখন একবার শুধু মেসির দিকে তাকান। যদি সে তার নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে তাহলে আমি কোন কারণই খুঁজে পাচ্ছি না যে আপনি কেন আপনার স্বপ্নটা পূরণ করতে পারবেন না।
একবার মেসি বলেছিলেন, আমার হাতে এখনো অনেক বছর পরে রয়েছে আরো ভালো আরো বেটার হওয়ার জন্য। সেটাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। যেদিন কোন খেলোয়াড়ের মনে হবে তার ইম্প্রূভ করার আর কিছুই বাকি নেই আমার মতে সেই দিনটি যে কোন খেলোয়াড়ের জন্য সবথেকে বড় দুঃখের দিন। তার ঠিক এই মনোভাবটিই তাকে প্রতিনিয়ত আরো ভালো হয়ে উঠতে সাহায্য করছে।
✅ অনুপ্রেরণা ৪: নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা
মেসি তার সেটব্যাকগুলোকে ব্যবহার করেন মোস্ট রিমার্কেবল কামব্যাক হিসেবে গড়ে তুলতে। যদি কখনো আপনার মনে হয় আপনি আপনার স্বপ্ন কোনদিন পূরণ করতে পারবেন না তখন শুধু একবার এইটুকু ভাবুন, যে আপনি কেন শুরু করেছিলেন? আর তারপর যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছাছেন ততক্ষণ অব্দি যুদ্ধ চালিয়ে যান।
এটা হয়তো ফুটবলের ভগবানের কাছে থেকে শেখা সব থেকে বেশি ভালো একটা লাইফ লেসন। ঠিক এটাই মেসি করেছিলেন। তিনি তার স্বপ্ন পূরণের জন্য শেষ অব্দি যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলেন।
তার আর একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “তৈরি থাকো তোমাকে তোমার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অনেক যুদ্ধের মোকাবিলা করতে হবে। তোমাকে অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”
✅ অনুপ্রেরণা ৫: হাল না ছাড়া
আমরা তাকে নিয়ে অনেক কিছু বলেছি। খবরের কাগজের হেডলাইনে তাকে অবিশ্বাস্য, অতুলনীয়, অদ্বিতীয়, আশ্চর্য থেকে শুরু করে মেসি হলেন ফুটবলের ভগবান। এই অব্দিও বলা হয়েছে। এক্স বাসেলোনা কোচ পেপ গোর্ডেলিও একবার বলেছিলেন, “তার ব্যাপারে কিছু লিখে লাভ নেই। তাকে বর্ণনা করার চেষ্টা করাও বৃথা। শুধু তার খেলাটা দেখুন। আর উপভোগ করুন।”
মেসির জীবন কাহিনী লেখাটি নিজের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন স্পেশালি তাদের সাথে যারা মেসির খুব বড় ভক্ত। কমেন্ট করে আমাদেরকে জানান নেক্সট কার জীবনের উপর আপনি জিরো টু হিরো লেখা দেখতে চান। কারণ আপনাকে সাহায্য করতে পারাটাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য।
Love you Boss
Post a Comment