GuidePedia

0
এর নাম প্রবাসী, 
আমার বাবা সিংগাপুর আসছে ২০০৫ সালে, বার বার কোম্পানী পরিবর্তন এবং অনেক টাকা দার দেনা থাকায় সংসার চালাতে খুব হিমসিম খাচ্ছে,।সংসারের হাল ধরতে  বাবার মধ্যমে ২০১৬ আমিও সিংগাপুর আসি আমার বয়স তখন ১৮ যেইদিন আমি ব্যাংক কার্ড হাতে পেলাম সাথে সাথে বাবার কাছে দিয়ে দিলাম, মাসে মাসে ১০ ডলারের মতো হাত খরচ নিতাম, সিংগাপুর ২ বছর একসাথে থাকার পর অর্থনৈতিক  সমস্যা কিছুটা ভালো হয়, বাবার কষ্ট চোখের সামনে দেখতে আর ভালো লাগছিলো না। তাই ২ বছর পর কিছু টাকা জমিয়ে বাবাকে দেশে পাঠিয়ে দিলাম, তারপরে মাসে মাসে যেই টসকা বেতন পাইতাম শুধু খাবারের খরচ রেখে বাকি সব টাকা তাকে পাঠিয়ে দিতাম।মাজে মাজে টাকা একটু কম দিলে সে হিসাম নিতো কেন কম হলো কারন সব মাসে সমান ইনকাম হয় না।সে টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখে।  

সে সিংগাপুর আসার আগে তার একটি দোকান ছিলো ভাড়া দোকান, আমার বাবার বললো বাড়ির সামনে আমাদের একটি জমিতে সে একটি দোকান দিতে চায়, তার জন্য আমার কাছে টাকা চায়, আমি মাসে মাসে টাকা দেই আর সে আস্তে আস্তে দোকান তৈরি করে আর আগের টাকা তার ডিপোজিট করা। এই ভাবে আমার প্রায় সিংগাপুর ৪ বছর হয়ে যায় দোকান করা হয়ে গেছে ৩ রুমের একটি দোকান বিল্ডিং করে উঠালো, এবার দোকানে মালামাল উঠাবে আমার মাসে মাসে টাকা দিতেছি আর বাবা দোকান মালামাল তুলতেছে। এর মধ্যে আমার বোনের বিয়ে দিলো সেই টাকাও আমি দিতেছি। এর পর বাবা সিদ্ধান্তঃ নিলো একটি মাছের খামার করবে পুকুর করার জন্য আবার মাসে মাসে কম কম খরচ করে টাকা পাঠাতাম। এই ভাবে করে সিংগাপুরে আমার ৫ বছর বাবা এখন প্রতিষ্ঠিতো,ব্যাংকে টাকা আছে দোকান আছে পুকুর আছে। কিন্তু আমার এখনোও ১ টাকাও নাই। 

আমার একটু শারিরিক সমস্যা দেখাদেয় বাবা মা কে জানালান বাবা বলে আসা লাগবে না এইটা কোনো সমস্যা না সবারই কমবেশি থাকে, মা বলে আসার দরকার নাই আমি দোয়া করে দিমু ভালো হয়ে যাবি।আর না পেরে দেশে গেলাম ছুটিতে বাবা মা কে বলছি টাকা দেও ডাক্তার দেখাবো কারন আমার কাছে তো কোনো টাকা নেই, আজ কাল করে সময় সেস হয়ে গেলো আমি সিংগাপুর চলে আসলাম ডাক্তার দেখানো হলোনা। কয়েক মাস পর মনো হলে অবস্থা খুবই খারাপ চিকিৎসা না করলে বড়ো কোনো সমস্যা হবে একটা অপারেশন দরকার তাই ভয়ে কম্পানীকে জানাইনি, এর মধ্যে বাড়ি থেকে বিয়ের বিষয় আলোচনা চলতেছে বাবা মা মেয়ে দেখতেছে। 

অনেক দেখাদেখির পর একটা মেয়ে তাদের পছন্দ হয়, সেখানে তারা আমার বিয়ে ঠিক করে। মেয়েটির ফোন নাম্বার এবং ফটো আমাকে দেয় আমি মেয়ের সাথে ভিডিও কলে কথা বলছি,মেয়েটি আমার থেকে অনেক বয়ষ্ক আমার পছন্দ হলো না। আমার বাবা মা কে জানাই তারা বলে মোবাইল এমন দেখে সামনাসামনি অনেক সুন্দর। বাবা মার সেখানেই পছন্দ কারন মেয়ে যেমনই হোক মেয়ের বাবা বলছে ফানিচার দিবে মেয়ের গয়না ছেলের চেইন বনাই কে চেইন দিবে আর সকল খরছ তারাই বহন করবে। ১ বছর পর চিকিৎসা করার জন্য আবার ছুটি নিয়ে দেশে আসলাম, চিকিৎসা বাদ দিয়ে তারা আমার বিয়ে নিয়ে নিয়ে বেসি ব্যাস্ত, যেইদিন বাড়িতে গেলাম সারাদিন প্রচুর বিষ্টি তার ভিতরে মেয়ে দেখাতে আমাকে নিয়ে গেলো সপই মেয়েকে দেখাতে, মেয়ে দেখে আমার পছন্দ হলো আমি না বলে দিলাম।কিন্তু বাবা মা কিছুতেই মানতেছে না তারা সবাই কে দিয়ে আমাকে বুঝতে চেষ্টা করতেছে সকাল সন্ধ্যা সবাই এসে আমাকে বুঝতে লাগলো, একটা সময় আমার বাবা আমার হাতে দরে অনুরোধ করে কেঁদে দেয় তারপর আমি রাজি হয়ে গেলাম নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। কোনো আয়োজন ছারাই মেয়ের বাড়িতে রওনা হলাম রাতে বিয়ে হলো। প্রথম রাতে বউকে দেখে আমার একটু সন্দেহ হলো মনে হলো তার আগে বিয়ে হয়েছিল আথবা সে দৃগসময় দরে কারো সাথে লিফ টুগেদার এ আছে চেহার ভিতর ও বয়সের ছাপ পরেগেছে। কিছুদিন পরে যানতে পারলাম তার বয়ষ আমার থেকে ৫ বছরের বেসি,আমার সাথে বিয়ের ৮ বছর আগে এক ছেলের সাথে সম্পর্ক করে বাড়ি ছেরে চলে গেছে, আমার সাথে বিয়ের ২ মাস আগে আবার বসড়ি চলে আসছে।আমার বাবা মা নাকি সব জানতো শুধু খরচের ভয়ে আমাকে বাধ্য করছে। সেই বার আমার চিকিৎসা হলো না চলে আসলাম সিংগাপুর।

 এবার সিদ্ধান্তঃ 

নিলাম কিছু টাকা নিজের কাছে রাখবো, সিংগাপুর আসার কয়েক মাস পর করোনার সমস্যা শুরু হয়ে গেছে, সরকার কাজ বন্ধ করে দিলো আমি ও করনায় আক্রান্ত হলাম দেশেও যেতে পারছি না।এইভাবে ১ বছর ৬ মাস হয়ে যায় এর মধ্যেও বাড়িতে ১.৫ লাক্ষ টাকা দিলাম, এতে বাবা খুশি না আগের মতো টাকা কেন দিলাম না। তাদের কে বলছি করনার কারনে দৃগদিন কাজ বন্ধ ছিলো, তাদের দাবি টাকা শ্বশুর বাড়ি দিয়ে দেই বউর কথায় টাকা বাড়িতে দেইনা আরো অনেক কথা। আবস্থা কিছুটা সাবাবিক হলে আমি পারমিট সেস করে দেশে আসলাম কিছু টাকা হাতে রেখে কিছু টাকা ডিপোজিট করলাম। দেশে এসে প্রথম টাগেট চিকিৎসা, তাই বাবা মা বললাম আমার কাছে কিছু টাকা আছে তোমরা কিছু দেও। মা বলে আমার কাছে নেই বাবাও বলে আমার কাছে নেই। তাদের আশা বাদ দিয়ে নিজেই চিকিৎসা করতে হাসপাতালে রওনা হলাম একটা অপারেশন লাগবে তাই বাবা ও বউ সাথে আসলো। বাড়িতে মা কে বলে আসলাম আজকে বিকালে আমার অপারেশন হবে কিন্তু মার মাজে  তেমন একটা কষ্ট দেখতে পেলাম না তিনি খুবই সাভাবিক। বিকালে আমার অপারেশন হলো ডাক্তার বললো ২ দিন এখানে থাকতে হবে, এই কথা শুনে বাবা বললো আমার দোকান বাড়ি সব পরে আছি আমি চলে যাই, কিছু কিনা কাটা করে দিলাম তোরা থাক ২ দিন সেস হলে চলে আসিস।

বলে বাবা চলে গেলো যাওয়ার সময় জিজ্ঞেসা করলো না তোদের কাছে টাকা আছে কিনা? 

কোনো কিছু লাগবে কিনা?থাকতে পারবি কি না। বউ সবকিছু দেখাশোনা করে ইনজেকশন এর সময় হলে নার্স ডেকে নিয়ে আসে বাহির থেকে খাবার কিনে নিয়ে আশা আমার একটু ভয় হতো মেয়ে মানুষ কোনো সমস্যা হয় কিনা হয়তো বাবা থাকলে ভালো হতো বাড়িতে ছোট একটা ভাই আছে ক্লাস ৮ম এ পড়ে তাকে পাঠালে ও হতো সে আবার বাবার দোকান দেখাশোনা করে তাই তাকে পাঠায়নি।  ২ দিন পর হাসপাতালে থেকে রওনা হলাম বাড়িতে এসে দেখি সব সাভাবিক যে যার যার মতো আমি কোথায় থেকে আসলাম মনে হচ্ছে কারো যানা নেই।

বাড়িতে আসতেই শুনলাম বাবা মার কাছে বলছে তার অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে আসা যাওয়ার ভাড়া আরো কিছু কিনাকাটা করছে সবমিলে তার দের হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে সাথে সাথে মার কাছে আমি ২ হাজার টাকা দিয়ে দিলাম, মনে করছি মা নিবে না, মা টাকাটা হাসি মুখে নিয়ে নিলো। এখন আর আমার কাছে টাকা নাই চলাফেরা করতে সমস্যা হচ্ছে ওষুধ সেস কিনতে পারতেসি না, বাধ্য হয়ে মা কে বললাম ওষুধ নেই,  মা বলে তোর বাবা বল আমার কাছে কি টাকা আছে।পড়ে আমি টাকা মেনেজ করে ওষুধ কিনলাম। এখন শ্বশুর বাড়ি ও যেতে পারছি না টাকার কারনে, আফসোস করে মা কে বললাম এতো টাকা তোমাদের দিলাম ৫ বছরে এক টাকাও নিজে রাখনি ৫ বছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো দিলাম, এখন আমি চলতে পারতেসিনা তোমরা তো  জানো আমার কাছে যা ছিলো সবসেস, কই তোমরা তো আমাকে বলতেছোনা যে তোর কাছে তো টাকা নাই  দর কিছু টাকা দিলাম তুই খরচ কর। মা শুনে বলতেছে তোর টাকা দরকার কি থাকোছ বাড়িতে খাও বাড়িতে টাকার দরকার কি, এতো বাহিরে যাওয়ার কি দরকার। 

এই ভাবে বাড়িতে ৪ -৫ মাস হয়ে গেছে, মা  বাবা বলতে শুরু করছে এখনো যাস না কেন? 

সিংগাপুর যেতে দেরি দেখে তারা বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে মাঠে নিয়ে যায় কাজ করাতে, মাজে মাজে দোকানে ও বসায়। মাজে মাজে বাবা খুব আফসোস করে বলেযে ছেলেরা বিদেশ থেকে এসে বাবা মার হাতে টাকা দেয় আর তো বিদেশ থেকে এসে ১ টাকাও দিলি না। আমি সিংগাপুর থাকা বন্ধুদের কাছ থেকে দার দেনা করে চলি, মাজে মাজে বাজার করেও আনি,  ভাই বোন মা বাবাও মাজে আমার কাছে টাকা চায় যখন থাকে দিয়ে দেই। আমি যখন বাড়িতে তখনই শুনতে পাই টাকা নাই চাউল নাই আরো অনেক সমস্যা, যতবার বাড়িতে আসলাম কখনোই ভালো কিছু খেতে পারতাম খুবই নরমান রান্না বান্না হতো কোনো ভালো বাজার করা হতো না, তাই আমি মাজে মাজে বাজার করতাম। সিঙ্গাপুরে কোম্পানিকে ফোন করে ভিসা করাইলাম, কিছুদিন পর সিঙ্গাপুর চলে যাব, সিঙ্গাপুর যাইতে কিছু টাকা লাগবে বাবা মাকে বললাম টাকা দাও,  বাবার ডাইরেক্টলি না বলে দিল তার কাছে কোন টাকা নেই, পরে শশুরের সহযোগিতায় এবং সিঙ্গাপুরে থাকা বন্ধুদের সহযোগিতায় টাকা ম্যানেজ করলাম। সিঙ্গাপুরে যাওয়ার ভিসা টিকিট রেডি বাবা মা কেহুই ১০০ টাকার একটা গেঞ্জি ও কিনে দিলো না হাতে ১০০ টাকা ও দিলো না। সব কষ্ট বুখে নিয়ে আমার সিংগাপুর চলে আসলাম।


লিখেছেন👇
শাহারিয়া মোহাম্মদ সোহেল।

Post a Comment

 
Top