GuidePedia

0

 বিদেশ গমনের পূর্বেই সিদ্ধান্ত নিন, পরিকল্পনা করুন আপনি কত বছর বিদেশে থাকবেন। অথবা বিদেশ গমনের পর আপনার বেতন ও পরিবেশ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে পরিকল্পনা গ্রহন করুন, আপনি ঠিক কত বছর বিদেশ থাকবেন। যারা পরিকল্পনা বিহীনভাবে প্রবাসে থাকেন তাদের ভবিষ্যৎ খুবই খারাপ হয়। জীবনপুরোটাই প্রবাসে কাটিয়েও বেশিরভাগ প্রবাসী তার পরিবারকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যেতে পারেন না, শুধু পরিকল্পনার অভাবে। প্রবাসে কাজ করতে করতে কেউ মারা যান আবার কেউ কাজ করতে করতে অসুস্থ হয়ে নিজের শক্তি সামর্থ্য হারিয়ে শূন্য হাতে দেশে ফেরত এসে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। তখন আর জীবনের হিসাব মেলাতে পারেন না। আমি এমন অনেক প্রবাসীকে দেখেছি যারা বিদেশ যাওয়ার আগে যে অবস্থায় ছিলেন, ১৫-২০ বছর বিদেশ করে এসে তারচেয়েও খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। এটা কাম্য নয়। কি করবেন? ১. বিদেশ যাওয়ার পূর্বে একান্ত নিজের নামে একটা ব্যাংক একাউন্ট করে যাবেন, সেই একাউন্টে নিজের বেতনের একটা অংশ প্রত্যেক মাসে অবশ্যই পাঠিয়ে রাখবেন। এবিষয়ে পরিবারকে না জানানোই ভালো। পরিবারের খরচের টাকা পরিবারের একাউন্টে পাঠান। মনে রাখবেন, মাসিক খরচের জন্য পরিবারকে যত বেশি টাকা পাঠান না কেন মাসের শেষর দিকে তাদের টানাটানি থাকবেই, তাই বলে সঞ্চয় বন্ধ করবেন না। সঞ্চয় অবশ্যই ব্যাংকে করতে হবে বালিশ বা বিছানার নিচে নয়। ২. পরিবার বা সন্তান যা বলে তাই করবেন না, নিজের বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে অভিজ্ঞদের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিন। ৩. আপনি বিদেশে থাকলেও আপনার সন্তান স্কুলে যাচ্ছে কি না, প্রাইভেট পড়তে দিয়েছেন সে ঠিক মত যাচ্ছে কি না, এগুলো খোজ রাখা কঠিন কিছু নয়। সে যে স্কুলে পড়ে সেখানকার একজন শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ রাখুন। আপনার সন্তানের পরীক্ষার খবর নিন। যদি বিদেশে থেকে পরিবার ম্যানজমেন্ট করতে না পারেন তবে বিদেশ করার প্রয়োজন নাই, দেশে আসুন দিনমজুরি করে পরিবার চালান। আপনার সম্তান মানুষ হবে ইনশাআল্লাহ। সন্তান মানুষ না হলে আপনার বিদেশের টাকা জলে যাবে। ৪. সমাজের মুরুব্বিদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখুন, সমাজের ভালোমন্দে অংশগ্রহণ করুন। ৫. নির্দিষ্ট সময় পর ছুটিতে দেশে আসলে ব্যাংকে সঞ্চিত টাকার খবর নিন, এফডিআর করুন অথবা নিজের নামে সম্পদ কিনে রাখুন বা পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগ করুন। ৬. অনেক প্রবাসী হঠ্যাৎ করে দেশে এসে সঞ্চিত সব টাকা না বুঝে বিনিয়োগ করে লসের মুখোমুখি হন। এটা না করে সময় নিন বুঝুন তারপর বিনিয়োগ করুন। খামার করতে পারেন, হাস, মুরগী, গরু, ছাগল কৃষি ইত্যাদি অথবা কোন উৎপাদনমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলুন। আরো ১০ জনের চাকরির ব্যবস্থা আপনিই করতে পারেন। ৭. কোথাও বিনিয়োগ করার আগে প্রবাসীদের বিনিয়োগে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করে দেয় এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, IOM, BRAC ইত্যাদি, তাদের সাথে আলাপ করতে পারেন। ৮. পরিকল্পনা অনুযায়ী ১০ বা ১৫ বছর পর দেশে ফিরে আসুন, পরিবারের সাথে থাকুন। জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই পরিবার নিয়ে আনন্দে কিছু বছর কাটানোর টার্গেট রাখুন। ৯. প্রবাসে নিজের দেশের ও নিজের সম্মান সমুন্নত রেখে বিদায় নিয়ে আসুন। ১০. বিদেশে থাকা অবস্থায় চাইলেই বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনকে টাকা ধার দিয়ে সম্পর্ক নষ্ট করবেন না। টাকা ধার দেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীতা বুঝুন এবং সে অনুযায়ী সম্পর্ক বজায় রাখুন। যুক্ত থাকুন লিংকড-ইনের সাথে। কালেক্টড।

Post a Comment

 
Top