GuidePedia

0
উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সভ্যাটির নাম হলো সিন্ধু সভ্যতা। এই সিন্ধু সভ্যতা ছিল মূলত ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা। ইতিহাসে ব্রোঞ্জ যুগ ধরা হয় খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০০- ১৩০০ খ্রিস্টপূর্ব পর্যন্ত সময়কালকে। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই সভ্যতার কেন্দ্র ছিল মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সিন্ধু নদের অববাহিকা। এই সভ্যতা হরপ্পা সভ্যতা নামেও পরিচিত। তবে আলোচিত এই সভ্যতার আবিষ্কার খুব বেশিদিন আগের নয়।


১৯২২-২৩ সালের কথা। ব্রিটিশ পুরাতত্ত্ববিদ স্যার জন মার্শালের ভারতীয় সহকারী রাখালদাস অধুনা পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের লারকানা জেলার মহেঞ্জোদাড়ো এলাকায় বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। তার ক’দিন আগেই মহেঞ্জোদাড়োর কয়েকশ’ মাইল উত্তরে পাঞ্জাবের মন্টগোমারি জেলার হরপ্পায় একটি প্রাচীন শহরের চার-পাঁচটি স্তরবিশিষ্ট ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছিল। আর এতেই নড়েচড়ে বসেন প্রত্নতাত্তি্বকরা। আশেপাশের এলাকাজুড়ে শুরু হয় ব্যাপকভিত্তিক অনুসন্ধান। ভারত ও পাকিস্তানের নানা জায়গায় এরকম আরো শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়। এই আবিষ্কার সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের প্রত্নতাত্তি্বক আবিষ্কারের সমস্ত অতীত রেকর্ড ভেঙে ফেলে। ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্তি্বকরা মনে করেন, এই সব শহর একটি স্বতন্ত্র সভ্যতার অন্তর্গত ছিল। এই সভ্যতাই সিন্ধু সভ্যতা, মেসোপটেমিয়ান সাহিত্যে সম্ভবত যার নাম মেলুহা। ভৌগোলিক বিস্তারের দিক থেকে বিচার করলে সিন্ধু সভ্যতা ছিল প্রাচীন পৃথিবীর বৃহত্তম সভ্যতা। এই সভ্যতার ব্যাপক বিস্তৃতি বিশ্বের অন্যান্য প্রাচীন সভ্যতা থেকে এই সভ্যতাকে একদমই আলাদা করে তুলেছে।

এই সভ্যতা ছিল তাম্র-ব্রোঞ্জ [ক্যালকোলিথিক] যুগের সভ্যতা। কারণ, লোহার ব্যবহার এই অঞ্চলের অধিবাসীদের অজ্ঞাতই ছিল। এই সভ্যতার সামগ্রিক সময়কাল ধরা হয় ৫৫০০-১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। সিন্ধুবাসীদের প্রধান কৃষিজ ফসল ছিল গম, যব, মটর, খেজুর, তিল ও সরষে। সভ্যতার অনেক আগেই কৃষির উন্মেষ ও বিকাশ ঘটেছিল।

Post a Comment

 
Top