ছেলেটার জন্ম ১৯৪৯ সালের ৭ই মার্চ। বাবা বরিশাল জেলার রহিমগঞ্জ গ্রামের জনপ্রিয় মুর্শিদী গায়ক আব্দুল মোতালেব হাওলাদার। সেদিনও হাওলাদার সাহেব সবাইকে নিয়ে গান বাধছিলেন। হঠাৎ করে গানের মাঝে একটা ছেলে বাধা দিয়ে বলে আপনে এখানে গান বান্ধেন আর ঐদিকের কোন খবর রাখেন? জলদি বাড়িত যান আপনার এক পোলা হইবো আইজ। হাওলাদার সাহেব
গান ছেড়ে বাড়ির পথে ছুটেন। ছেলের মুখ দেখেই গায়ক সাহেব খুব খুশি। ছেলের আদর যত্নে গায়ক বাবা কোন কমতি রাখলেন না। দেখতে দেখতে ছেলের বয়স পাঁচ বছরের মতন হয়ে গেল। শখের মুর্শিদী গায়কের অর্থসম্পদ খুব একটা ছিল না যে ছেলেকে লেখাপড়া করাবেন।
গান ছেড়ে বাড়ির পথে ছুটেন। ছেলের মুখ দেখেই গায়ক সাহেব খুব খুশি। ছেলের আদর যত্নে গায়ক বাবা কোন কমতি রাখলেন না। দেখতে দেখতে ছেলের বয়স পাঁচ বছরের মতন হয়ে গেল। শখের মুর্শিদী গায়কের অর্থসম্পদ খুব একটা ছিল না যে ছেলেকে লেখাপড়া করাবেন।
তাই একদিন তার সমন্ধিকে বললেন “জানেনই তো নদীর ভাঙ্গনে জমি জিরাত সব গেছে, পোলাডারে যে পড়ামু সেই উপায় নাই, একটু যদি দেখতেন”। তারপর থেকে ছেলেটা তার বড় মামার কাছে থেকেই পড়াশোনা করে। ছিল খুবই তুখোড় ও মেধাবী ছাত্র। ক্লাসে সবসময়ই প্রথম হয় । আর ছিল অঙ্কের উপর একটু বেশিই ভালবাসা। একদিন স্কুলে এসডিও সাহেব আসলেন। এসডিও সাহেব ক্লাস নাইনে গিয়ে নাইনের ছাত্রদের একটা অঙ্ক করতে দিলেন, কিন্তু কেউই করতে পারলো না। তা দেখে ক্লাস সিক্স থেকে স্যারেরা ছেলেটাকে নিয়ে এসে বললো, “এ ছেলে এটা করতে পারবে, অংকে ছেলেটা খুবই মেধাবী”। ছেলেটাও মুহূর্তের মধ্যে সমাধান দিয়ে দেয়। এসডিও সাহেব ক্লাস সিক্সের ছেলের এরকম মেধা দেখে বিস্মিত আর খুশি হয়ে তার নিজের কলম আর ২০ টাকা উপহার দিলেন। এভাবে করেই ১৯৬৪ সালে মুলাদি মাহমুদজান পাইলট হাইস্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করে ফেলে ছেলেটা।
কলেজে উঠে ভর্তি হয় বরিশালের বিখ্যাত ব্রজমোহন কলেজে। থাকার ব্যবস্থা হয় মেঝ মামার বাড়িতে। এখান থেকে ১৯৬৬ সালে আই এ পাশ, তারপর ভর্তি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়েই সশস্ত্রবাহিনীতে যোগদানের ইচ্ছা হয় ছেলেটার। মামাকে জানান নিজের ইচ্ছের কথা। মামা রাজি হয়ে গেলে বিমানবাহিনীতে পরীক্ষাও দেন। সবগুলো পরীক্ষায় টিকে গেলেও চুড়ান্ত মেডিকেল টেস্টে আটকে যান ডান চোখে একটু সমস্যার কারণে।
দমে না গিয়ে আবার সেনাবাহিনীতে পরীক্ষা দেন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাহসিকতা আর সাফল্যের কারণে আরও বেশি বাঙ্গালি সশস্ত্রবাহিনীতে নেয়া শুরু হয়। ছেলেটাও তখন ১৯৬৭ সালে ১৫তম শর্ট কোর্সে প্রশিক্ষণার্থী অফিসার ক্যাডেট নির্বাচিত হন এবং কাকুলে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে কমিশন্ড প্রাপ্ত হয়ে ১৭৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়নে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালের ৩ ডিসেম্বর লেফটেন্যান্ট পদ লাভ করে।
১৯৬৯-১৯৭০ সালে রিসালপুর মিলিটারি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে বেসিক কোর্স ট্রেনিং এবং পরে ইনফ্যান্ট্রি স্কুল অফ ট্যাক্টিক্স থেকে ওয়েপন ও ডব্লিউ কোর্স -১৩ সমাপ্ত করে। ১৯৭০ সালের ১৩ই আগস্ট তাকে ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত করা হয়।পাকিস্তানে অবস্থান করছে বলে পূর্ব পাকিস্তানে কী হচ্ছে-না হচ্ছে, ছেলেটার জানার সুযোগ ছিল না। কিন্তু মনের মধ্যে একটা অশুভ সংকেত বাজে। মার্চ মাসের পর পূর্ব পাকিস্তানের কোন খবর রেডিওতে আসছিল না বলেই তার এরকম সন্দেহের কারণ। এপ্রিল মাসে ৭ দিনের ছুটিতে করাচি চলে যান বোনের বাড়িতে। সেখানের বিবিসির রেডিওতে জানতে পারেন দেশের অল্প কিছু। ভেবে পাচ্ছিলেন না এখন তার কি করা উচিৎ। তাকে তার দেশে ফিরে যেতে হবে, কিন্তু এখান থেকে তাকে পাকিস্তানিরা যেতে দেবে না। এ অবস্থায় ছুটি শেষ করে কাজে ফিরে তার মতো বাকিদেরও খুঁজে বের করতে লাগলেন।
কারণ বুদ্ধিমান ছেলেটা জানে এখান থেকে সে একা পালানো মানে মারা যাওয়া। আর এই মূহুর্তে নিজের জীবনটা বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরী। তাকে যে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে যুদ্ধ করতে হবে। একসময় তার মতই আর তিনজনকে পেয়েও গেল। যোগ দিল প্রিয় বন্ধু ক্যাপ্টেন সালাউদ্দীন মমতাজ ও ক্যাপ্টেন আজিজ পাশা।জুলাই মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানিদের ধোঁকা দিয়ে সেনানিবাস থেকে বের হয়ে তারা শিয়ালকোট থেকে একটা ট্যাক্সি নেন। পরিকল্পনা হয় প্রথমে পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত মারালা যাবেন। কারণ রেডিওতে শুনেছে ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য করছে। নিশ্চয়ই বর্ডার পার হতে পারলে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়া যাবে। কিন্তু ভারতীয় সৈন্যের হাতে ধরাও পরা যাবে না.. কারণ পাকিস্তান থেকে ভারতে প্রবেশ করা সৈন্যকে কোন কিছু বিশ্বাস না করে গুপ্তচর মনে করে মেরে ফেলা হলে, সেটা স্বাভাবিকই হবে। মারালা এসে একটা দরগার কাছে এসে ট্যাক্সি ড্রাইভারকে বলেন, আপনি এখন চলে যান আমরা দরগায় দুই তিন ঘন্টা থাকবো, সন্ধার পরে এসে আমাদের নিয়ে যাবেন।
ড্রাইভার চলে গেলে বর্ডার পারের জঙ্গল পার হয়ে সামনে একটা খরস্রোত নদী.. এটা পার হলেই ইন্ডিয়া। একটু হাফ ছেড়ে বাঁচে তারা, এখনো ভারতীয় সৈন্য বা পাকিস্তানি সৈন্য কেউই তাদের দেখে নি। সন্ধার পরেই শুরু হলো নদী সাঁতরে পার হবার কাজ। সবার চোখগুলো জ্বল জ্বল করছে। মনে হচ্ছে এই নদী পার হলেই বাংলাদেশ। সেনাবাহিনীর কঠোর পরিশ্রমে অফিসার হওয়া তাদের জন্য এ নদী সাতরে পার হওয়াও অসম্ভবের কিছু না। নদী পার হয়েই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে দেশকে করতে হবে শত্রুমুক্ত। কিন্তু নদী পার হতে গিয়ে মনে হচ্ছে নদীটা যেন আর ফুরায় না। শরীরে ক্লান্তি ভর করে। মনে ভাবনা আসে তীর আর কতদূর?অবশেষে বহু অপেক্ষা, প্রতীক্ষা আর অবসাদের পর সবাই মুক্তিযোদ্ধাদের সদর দফতরে এসে পৌছায়। ভারতীয় সেনা অফিসাররা তাদের কথা জানতে পেরেই ছুটে আসে। কয়েকদিন তাদের কড়া জেরার মুখে রাখা হয়। অবশেষে সকল দ্বিধা দূর হলে তাদের মুক্তিযুদ্ধ করতে আর বাধা থাকে না। প্রবাসী সরকার তাদের সবাইকে সাদরে গ্রহন করে। ও এতক্ষন তো ছেলেটার নামটাই বলা হয় নি । ছেলেটার নাম ছিল ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। তাকে মেহেদিপুর সাব সেক্টরের দায়িত্ব দেয়া হয়। এখান থেকেই চার বন্ধু আলাদা হয়ে যান চার জায়গায়। বিদায়ের মুহূর্তে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর প্রিয় বন্ধু সালাউদ্দীন মমতাজকে বিদায় দেন এই বলে “পরেরবার স্বাধীন বাংলাদেশেই দেখা হচ্ছে”। অল্পদিনের মধ্যেই ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর তার মেহেদিপুর সাব সেক্টরে অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
ট্রেনিংয়ের ব্যাপারে ছিলেন খুবই কঠোর। প্রায়ই তার ট্রেইনি মুক্তিযোদ্ধাদের বলতেন, ট্রেনিংয়ে যত ঘাম ঝরাবে, মনে রাখবা যুদ্ধে ততই কম রক্তক্ষয় হবে। আবার মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর যা বেতন পেতেন তার মাত্র ২০ টাকা নিজের জন্য রাখতেন বাকি টাকা শরণার্থীদের জন্য পাঠিয়ে দিতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী সরকার সকল সামরিক বাহিনীর অফিসারদের জন্য বেতন নির্ধারণ করে দিয়েছিল।মুক্তিযুদ্ধে অনেক সফল অভিযানের নেতৃত্ব দেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। একদিন সকালে চিন্তিত সহযোদ্ধাদের বলেন, আমাদের আরগারার হাট দখল করতে হবে। সহযোদ্ধারা সন্দেহ পোষণ করেন.. কারণ আরগারার হাটটা ছিল পাকিস্তানের শক্ত ঘাঁটি, আর সেখানে একটা রাজাকার কোম্পানিও ছিল। তবুও মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর নিজের আক্রমন পরিকল্পনায় অটল থাকেন।
কিন্তু সেবার সামনে দিয়ে আক্রমন করেও মুক্তিযোদ্ধাদের পিছে ফিরে আসতে হয়। এতে মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ভেঙ্গে না পড়ে আবার আক্রমনের সিতুমি দ্ধান্ত নেন। এবার পরিকল্পনা হয় আক্রমন হবে পেছন দিক থেকে। আক্রমনের পূর্বে তার সেক্টর, ৭ নাম্বার সেক্টর কমান্ডার লে.কর্নেল নুরুজ্জামানের কাছে আর্টিলারি আর মর্টার সাপোর্ট চান। তাকে আর্টিলারি সাপোর্টের আশ্বাস দেয়া হয়। তারপর কয়েকদিন ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর লে. কাইয়ুম কে সাথে নিয়ে শত্রুঘাঁটি রেকি করে আসেন। অবশেষে চুড়ান্ত দিন আসে। মুক্তিবাহিনী পেছন থেকে অতর্কিত হামলা করে। অতর্কিত হামলায় পাকিস্তানি নিরাপত্তা বুহ্য অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই ভেঙ্গে যায়। সামান্য অস্ত্র দিয়েই শুধুমাত্র নিজের রণকৌশলের জোরে আরগারার হাট দখল করে নেয় মুক্তিবাহিনী। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের কাছে পরাজিত হয়ে আরগারার হাটের রাজাকারেরা ক্ষমা চেয়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়। তারপর কানসাট, শাহপুরসহ বেশ কয়েকটি সফল অপারেশন পরিচালনা করেন ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। তার পরবর্তী লক্ষ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ..১০ ডিসেম্বর ১৯৭১।
লে. কাইয়ুম, লে. আউয়ালসহ প্রায় ৫০ জন মুক্তিবাহিনী নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আক্রমনের উদ্যোগ নেন ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। বেশ কয়েকটি নৌকায় তারা ভোররাতে উজান পাড়ি দেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশ্চিমে বারঘরিয়া। সেখানেই অবস্থান নেন তারা। পরিকল্পনা ছিল আর্টিলারি সাপোর্ট দিয়ে প্রথমে বিভ্রান্ত করে দেয়া হবে পাকবাহিনীকে। কিন্তু আর্টিলারি সাপোর্ট এলো না বলে পরিকল্পনা বদলাতে হলো।১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ভোর রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দখলের চুড়ান্ত আক্রমন শুরু হলো। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ২০ জন মুক্তিসেনা নিয়ে রওনা দিলেন চারটি দেশী নৌকায়।
রেহাইচর এলাকা দিয়ে মুক্তিসেনারা অতিক্রম করলো মহানন্দা নদী। তারপর উত্তর দিক থেকে শুরু হল নিঃশব্দ আক্রমন। অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেয়োনেট দিয়ে খতম করে দেয়া হল উত্তর ট্রেঞ্চের শত্রুপক্ষকে। এভাবেই একটার পর একটা ট্রেঞ্চে হামলা চালিয়ে দক্ষিনে যেতে লাগলেন তারা। এমনভাবে হামলা চালানো হচ্ছিলো যেন দক্ষিনের শত্রুপক্ষ কোনভাবেই টের না পায়। আর মাত্র কয়েকটা ট্রেঞ্চ বাকি। এগুলো শেষ করলেই বিজয়। এমন সময় ঘটলো বিপত্তি। পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্সের ৮-১০ জন সৈন্য ছিল বাঁধের উপর। তারা টের পেয়ে গোলাগুলি শুরু করে দিল।
তাদের সাথে বাকি পাকিস্তানি সৈন্যরা মিশে প্রবল আক্রমন শুরু করলো। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শত্রুমুক্ত না করে ফিরে যাবেন না এক কথায় বলে দিল। সবাইকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে নিজেও সামনে এগুতে লাগলেন। ওদিকে সামনে থেকে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ হচ্ছিল। এমন একটি গুলি হঠাৎ করে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ঠিক কপালের মাঝ বরাবর বিঁধে যায়। সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পরেন তিনি। পাকিস্তানিদের প্রবল আক্রমনের মুখে পিছু হটলো মুক্তিবাহিনী। পরে যখন এ সংবাদ মেহেদীপুর পৌছাল তখন তাদের কমান্ডারের মৃত্যুতে এক শোকাবহ পরিস্থিতি তৈরি হল। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করে সেক্টর হেড কোয়ার্টারের সাথে যোগাযোগ করে সেদিন বিকেলেই প্রবল আক্রমন করলো মুক্তিবাহিনী। আক্রমনের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় পাকিস্তানিরা।
যুদ্ধ শেষ হলে সহযোদ্ধারা নদীর পারে তাদের প্রিয় কমান্ডারের লাশ খুঁজে পায়। যথাযথ মর্যাদায় ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরকে তার সহযোদ্ধারা তার ইচ্ছে অনুযায়ী গৌড়ের সোনা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রিয় সেক্টর কমান্ডার নাজমুল হক এর কবরের পাশে শায়িত করা হয়.
Post a Comment