টমাস আলভা এডিসনঃ দুনিয়ার সেরা ঠগবাজ
১৮৪৭ সালের এই দিনে জন্মেছিলেন আমেরিকার উদ্ভাবক(!) টমাস আলভা এডিসন। বৈদ্যুতিক বাতির জনক হিসেবে পরিচিত এই লোক দাবী করেন প্রায় এক হাজারটি নতুন(!) জিনিস উদ্ভাবন করেছেন। যদিও ১৮৭৯ সালে যখন তিনি বাতির প্যাটেন্ট নেন তারও প্রায় ৫০ বছর আগে থেকেই ইলেক্ট্রীক বাল্ব ছিলো। হ্যা, তিনি সামান্য উন্নয়ন ঘটিয়েছিলেন কিন্তু আবিষ্কার করেন নি।
ফ্লুরোস্কোপ যার মাধ্যমে এক্স-রে তোলা হয় সেই যন্ত্রও আবিষ্কার করেছিলো জার্মান বিজ্ঞানী ভিলহেম রন্টজেন যিনি তার স্ত্রী আংটি পরা হাতের ছবি তোলেন যাতে হাঁড় দেখা যাচ্ছিলো। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যতম সেরা আবিষ্কার এই এক্স-রে।
ভয়েস রেকর্ডিং যন্ত্র ফোনোগ্রাফ উদ্ভাবনের যে ক্রেডিট তাকে দেওয়া হয় সেটা আবিষ্কারের ১৫ বছর আগে ফ্রেঞ্চ প্রকাশক ও বই বিক্রেতা এডয়ার্ড লিওন স্কট দ্যা মার্টিনভিল আবিষ্কার করেন। অথচ ১৮৭৭ সালে এডিসন যখন এই যন্ত্র বিক্রি করা শুরু করেন তখন মার্টিনভিলের নাম মুখেও আনেন নি।
সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার ঘটে চলচ্চিত্রের আবিষ্কার নিয়ে। এখানে ভণ্ড এডিসন খুন-খারাপি করতেও পিছ পা হয় নি প্যাটেন্ট বাগানোর ধান্দায়। ফ্রেঞ্চ ইনভেন্টর লুই দ্যা প্রিন্স মোশন পিকচারের যন্ত্র ও কৌশল আবিষ্কার করেন তিনি ইংল্যান্ডে তার যন্ত্রের প্রদর্শনী শেষে আমেরিকায় আসার পরিকল্পনা করেন। সাউদাম্পটন বন্দরে আসার উদ্দেশ্যে ট্রেনে চেপে বসেন ১৮৯০ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর। কিন্তু কোনদিন আর জাহাজ ধরতে বন্দরে পৌছান নি। তার সাথের লাগজগুলোও যেন স্রেফ হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। এই ঘটনার কিছুদিন পরেই এডিসন নতুন সিনেমা আবিষ্কার করেন যা মোশন পিকচার দেখায় পর্দায়। ১৮৯২ সালে যখন লুই দ্যা প্রিন্সের ছেলে এডিসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন প্যাটেন্ট পাওয়ার জন্য তখন অজ্ঞাত আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। তবে কপাল ভালো তার বাবার মত লাশ লাপাত্তা হয় নি।
তবে লুই দ্যা প্রিন্স ও তার হত্যাকারী হিসেবে তিনি কারো দ্বারা ট্যাগ পান নি। আদালত সর্বদাই ধনী লোকের পকেটে থাকে। তিনি সিনেমা যন্ত্র বিক্রি করে ফুলে-ফেপে ওঠেন। এডিসনের জোচ্চুরীর আরেক ধাপ দেখা যায় পরবর্তীতে।
১৯০২ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম মেকার জর্জ মাইলিসের মাস্টার পীস মুভি A Trip To The Moon মুক্তি পায়। তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া এই মুভি দেখতে এডিসনও ইংল্যান্ডে আসেন। Shaddy Theater নামক সিনেমা হল মালিককে প্রচুর টাকা দিয়ে মুভির একটি কপি বানিয়ে নেন। তারপর আমেরিকাগামী জাহাজে চাপেন। সেখানে গিয়ে আরো বেশ কিছু কপি করে বিভিন্ন সিনেমা হলে এই ছবি প্রদর্শন করে প্রচুর টাকা কামাই করেন যার থেকে একটা পয়সাও জর্জ মাইলিস পান নি। পরে যখন জর্জ মাইলিস এই মুভি নিয়ে আমেরিকায় আসেন তখন কোন হলেই আর চলে নি কারণ এডিসনের পাইরেসীর কারণে তদ্দিনে সবাই দেখে ফেলেছে।
তবে একক ভাবে এডিসন সবচেয়ে বেশি চুরি করেন নিকোলাই টেসলার নিকট থেকে। এডিসনের পরে টেসলার নিকট থেকে নামকাওয়াস্তে মূল্য দিয়ে প্যাটেন্ট কিনে বিজনেস করে জেপি মর্গান।
শৈশনে স্কুলে যেমন অকালকুষ্মান্ড মার্কা ইডিয়ট ছাত্র ছিলো বড় হয়ে হয় চোরের সর্দার। টমাস আলভা এডিসনের আবিষ্কারের মূলে ছিলো কিছু ভাড়াটে গুণ্ডা বাহিনী। তবে হারামী এই যন্ত্রবিদ একটা জিনিস ভালো জানতেন। ব্যবসার ফিকির। পরের জিনিস চুরি করে ব্যবসা করে সেই টাকা দিয়ে কিছু ব্রিলিয়ান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানীকে বেতন দিয়ে যন্ত্রের উন্নতি করে তা সেল করতেন। বিচারক ও স্থানীয় গভর্নর=দের ঘুষ দিয়ে নিজের পাশে রাখতেন।
লোকে যে দাবী করে এডিসন ১,০০০+ আবিষ্কার করেছে তার প্রায় পুরোটাইআবিষ্কার অন্যের থেকে চুরি করা নয়তো কেড়ে নেওয়া। আর না হলে নিজের অধীনস্ত বিজ্ঞানী দিয়ে বানানো।
টেসলার আবিষ্কার নিয়ে পূর্বে বিস্তারিত পোস্ট হওয়ায় আর বিস্তারিত লিখলাম না। তবে একটা জিনিস না বললেই নয়। টেসলার যে এসি কারেন্ট তার তীব্র বিরোধীতা করে এই এডিসন ও এসি কারেন্টের বিপদ বোঝাতে একটা হাতি কিনে তা ক্রেনে ফাসির মত ঝুলিয়ে কারেন্টের শক দিয়ে মেরে ফেলে যা জনসম্মুখে দেখায়। লোকে যেন টেসলার এসি কারেন্ট না কিনে। নিকোলাই টেসলার অপরাধ সে এডিসনের চুরি-চামারীতে বিরক্ত হয়ে জেপি মর্গানের নিকোট যায়।
তবে হ্যা, এডিসন আধুনিক কর্পোরেট বিজনেসের জনক যেখানে কর্মীদের পেটে-ভাতে বেতন দিয়ে মালিক পক্ষ বিলাস করে। যেমনটা বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টর ও গার্মেন্টস খাতে দেখা যাচ্ছে।
এডিসন প্রমাণ করেন, দুনিয়ায় সততার কোন দাম নেই ও উইনারই সব নিয়ন্ত্রণ করেন।
তথ্যসূত্রঃ
১। https://goo.gl/CMVW7j
২। https://goo.gl/aZEa81
৩। https://goo.gl/5aeTo6
৪। https://goo.gl/tcxHRn
৫। https://goo.gl/kWtYBb
১। https://goo.gl/CMVW7j
২। https://goo.gl/aZEa81
৩। https://goo.gl/5aeTo6
৪। https://goo.gl/tcxHRn
৫। https://goo.gl/kWtYBb
Post a Comment