GuidePedia

0
কানাডায় প্রবাস জীবনে থাকা এক প্রবাসীর কমেন্ট থেকে নেয়া- (যারা কানাডাকে স্বপ্নের দেশ মনে করেন)

১। অচেনা পরিবেশে শতভাগ একা বেঁচে থাকতে হয়। এখানে যেসব বাংলাদেশি নিজেদের কমিউনিটি বলে দাবী করে তাঁরা আসলে সুযোগসন্ধানী এবং ফেইম সিকার। নতুন ইমিগ্র্যান্টদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নিজেরা হিরো এবং ভগবান সেজে বসে। বিপদে পড়লে কেউ আসবে না।

২। বাচ্চা কাচ্চা ভবিষ্যতে ধর্ম পালন করবে কি না এটা একটা বড় প্রশ্ন। তাঁদের একই ধর্মের পাত্র-পাত্রীর সঙ্গে বিয়ে দিতে পারবেন কি না সেটা আরও বড় প্রশ্ন।

৩। দেশে একটা মানুষ তিরিশ বছর চল্লিশ বছর থাকলে একটা বেইস তৈরী হয়ে যায়, একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরী হয়ে যায়। সেটা ছেড়ে একদম শূণ্য থেকে শুরু করাটা অর্থনৈতিকভাবে খুবই চ্যালেঞ্জিং। প্রচুর মানুষ আছে যাঁরা দেশের চিফ একাউন্টেন্ট পদ ছেড়ে এখানে এসে মার্কেটের সামনে সিকিউরি গার্ড (দারোয়ান) হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন জীবিকার তাগিদে।

৪। এমনিতে চিকিৎসা ফ্রি মনে হলেও আসলে ফ্রি না। চিকিৎসা পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। স্পেশালিস্টের অভাব, ঔষধপত্রের অনেকদাম (বাচ্চা ও বুড়োদের জন্যে ফ্রি কেবল)। সাধারণ একটা এন্টিবায়োটিক কিনতেও পঞ্চাশ ডলার লেগে যায়।

৫। মনোপলি মার্কেট। সেটা কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে গাড়ির ইন্সুরেন্স সকল পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রেই। অল্প দু'টা বা তিনটা কোম্পানি সব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। সরকারের বেশিরভাগ বিজনেস ইনকাম ট্যাক্স ওদের কাছ থেকেই আসে, তাই ওরা ইচ্ছামত সরকারকে দিয়ে পাবলিক শোষণের নিয়ম তৈরী করে। গাড়ির ইন্সুরেন্স এটার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।

৬। ভয়াবহ খরচের দেশ। মাস শেষে হাতে টাকা বাঁচে না বলতে গেলে। অনেক মানুষ আছে যাঁরা দু'টা বা তিনটা কাজ করেন টিকে থাকতে। বেশিরভাগ মানুষই আসলে সহজে দেশে যান না, কারণ একটা যাতায়াতে যেই খরচ পড়ে, সেটা সেইভ করতে দুই থেকে তিন বছরও লেগে যায় ইনকাম লেভেলের উপর ভিত্তি করে।

৭। প্রচন্ড ঠান্ডা। বছরে ছয়-সাত মাস কোন আউটডোর একটিভিটি নাই, জাস্ট ঘরে বসে থাকবেন। শরীরে চর্বি জমে দ্রুত, সেটা আরও অনেক অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেয়। সারাক্ষণ কৃত্রিম তাপমাত্রায় থাকার ফলে কানাডায় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অন্য যে কোন দেশের চেয়ে বেশি। বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যায় মাসের পর মাস ঘরে থাকতে থাকতে।

৮। মুখে সবাই বলবে আমরা খুব হেল্পফুল, কিন্তু আপনি বাস্তবে দেখবেন যে আসলে চাকরি দিচ্ছি টাইপ প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল কাজ আপনাকে সিভি ঠিক করা, ইন্টারভিউয়ের ম্য়ানার শিখানো ইত্যাদি ভুংভাং বুঝিয়ে এনগেজড করে রাখা - এবং কত মানুষকে তাঁরা ওয়ার্কফোর্সের জন্য 'তৈরী' করছে সেই পরিসংখ্য়ান সরকারকে দেখিয়ে সেখান থেকে বেনিফিট নেয়া। মূলত আপনার চাকরি আপনাকেই খুঁজে নিতে হবে - কেউ সাহায্য করবে না।

৯। আপনি যদি খারাপ চাকরি (দারোয়ান বা ক্লিনার ইত্যাদি) করেন, আপনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন, আর যদি ভাল চাকরি করেন তাহলে দেখবেন যে আপনি ট্যাক্স দেয়ার পর আপনার হাতে যা থাকে, মানুষ কাজ না করেই সরকারি ভাতা-টাতা ইত্যাদি পেয়ে আপনার চেয়ে অনেক ভাল আছে। মূল কথা, আপনার কষ্টের উপার্জিত টাকার ট্যাক্সে সরকার কিছু মিথ্যাবাদী-গাঁজাখোর পালছে।  কানাডায় গাঁজা বৈধ, জানেন বোধহয়।

১০। অশিক্ষিত-কুশিক্ষিত জমি বেচে ইমিগ্রেশন নেয়া মানুষ (বিশ বছর আগে যখন জাস্ট ল্যান্ড করলেই ইমিগ্রেশন দিয়ে দিত) এসে ঘাঁটি গেঁড়ে বসেছে, সরকারের নানাবিধ সুযোগ সুবিধা নিয়ে তখন বাড়ি টাড়ি কিনে জাঁকিয়ে বসেছে, যেইসব সুযোগ সুবিধা এখন নেই। এবং উঠতে বসতে আপনাকে এক্সপ্লয়েট করার চেষ্টা করছে যে - এত লেখাপড়া শিখা কী করছ? কিছু করতে পারছ?

Post a Comment

 
Top