GuidePedia

0
আপেলের মাটি তৈরী 
আমার গাছে এতো ভালো ফলন কিন্তু টবের মাটিতেই হয়েছে।  গাছ গুলির বয়স ১ বছর থেকে ১.৫ বছর।  আমি মাটি তৈরী করেছিলাম ৬০-৭০ % গোবর (রোদে শুখিয়ে গুঁড়ো করে নিয়েছিলাম ) + ২০ % মাটি + ১০ % হাড়ের গুঁড়ো , খৈল গুঁড়ো , ডিমের খোসার গুঁড়ো , চা পাতার গুঁড়ো , অল্প কিছু লাল বালি মিশিয়ে মাটি তৈরী করেছিলাম।  মাটি তৈরির ৬/৭ দিন পর আমি গাছটি লাগিয়ে দেই।  

গাছ লাগানোর নিয়ম : 

গাছ লাগানোর পরে দেখলাম দুপুরের প্রচন্ড রোদে গাছের কচি পাতা গুলো কেমন যেনো নেতিয়ে পড়ছে আবার বিকেলে গিয়ে দেখি (রোদ কমে যাওয়ার পর ) গাছ গুলো আগের মতোই তরোতাজা হয়ে গিয়েছে।  আপনারা যারা নতুন গাছ লাগাবেন তারা এটা দেখে ভাববেন " হয়তো আমার গাছটি মারা যাচ্ছে " কিন্তু না।  বেশি রোদে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। তাই  প্রথম অবস্থায় গাছটি লাগানোর পরে গাছের উপরে একটু শেড দেয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।   কিছু দিন যাওয়ার পর অতিরিক্ত রোদেও  আর গাছটি ঝিমিয়ে পরবে না।

রোগ বালাই 

বেশির ভাগ আপেল গাছে দেখা যায় পাতা গুলো সাইড থেকে  পুড়ে গিয়ে কুঁকড়ে যাওয়ার মতো হয়ে যাচ্ছে এটা কোনো রোগ নয় অতিরিক্ত রোদের  কারণে অনেক সময়  পাতা পুড়ে যায় এটাকে "সান বার্ন " বলে।  আমার আপেল  গাছে মিলিবাগ এবং জাবপোকা ছাড়া অন্য  কোনো পোকার আক্রমণ কখনো লক্ষ্য করি নি। আর এই দুটো পোকার হাত থেকে গাছকে বাঁচানো খুবই সহজ।  ১ লিটার পানিতে ১ টি গুলের কৌটার অর্ধেক গুল মিশিয়ে সাথে ১ চা চামচ সাবান পানি (যে কোনো সাবান হতে পারে / হ্যান্ড ওয়াশ ও হতে পারে )  মিশিয়ে গাছের পাতার  ২ পাশে এক্সপ্রে করলেই এই পোকা গুলো চলে যাবে।  কোনো রকম রাসয়নিক কীটনাশক ব্যবহার করার দরকার নেই।  

গাছের খাবার 

গাছ লাগানোর পরবর্তী   প্রায় ৩ মাস গাছে কোনো খাবার দেই নি।  কারণ হাফ ড্রামে গাছ লাগিয়েছিলাম।  ওখানে যথেষ্ট পরিমান খাবার ছিলো।  পরবর্তীতে আমি খৈল  + সবজি  (বাসার সব্জির উচ্ছিষ্টঅংশ ) + ৫ -১০ কেজি গোবর একটি ড্রামে একসাথে পচিয়ে গাছের খাবার হিসেবে দিতাম।  অবশ্যই এই পচা পানি সরাসরি গাছে দেয়া যাবে না  তার সাথে দ্বিগুন পানি মিশিয়ে গাছের গোড়ার একটু দূরে দিয়ে দিতে হবে।  এ ছাড়া আমি কোনো খাবারও দেই নি।  গাছের মাটিও পরিবর্তন করি নি।  

গাছে ভালো ফলন আসার প্রধান কিছু পদ্ধতি 

১।  সামার প্রুনিং করতে হবে (এ বিষয়ে ইউটিউবে অনেক ভিডিও আছে। অবশ্যই ২/৩ ভিডিও দেখবেন তাহলে অনেক ভালো একটি ধারণা পেয়ে যাবেন। প্রিনিং এর উপর গাছের ফলন নির্ভরশীল )

২। শীতের শুরুতে আপেল গাছের উপর (Force Dormancy Method) প্রয়োগ করতে হবে সাথে কিছু প্রুনিং ও করতে হবে যেটাকে উইন্টার প্রুনিং বলে। Force Dormancy Method মানে হলো গাছকে জোর করে ঘুম পাড়িয়ে দেয়া।  এগুলো আমি বিস্তারিত বলছি না কারণ এগুলো নিয়ে ইউটিউবে বিস্তারিত বলা আছে।  

** পৃথিবীতে প্রায় কয়েক হাজার আপেলের জাত রয়েছে।  সব জাতে আপেল ফলানো আমাদের দেশে সম্ভব নয়।  অনেকেই আমাকে বলেছেন কারো গাছের বয়স ১০ বছর , কারো ৫ বছর কিন্তু ফল আসে না গাছে। এখানে জাত এর একটি বিষয় রয়েছে সাথে গাছের খাবার , প্রুনিং সব ব্যবস্থাপনা অতি জরুরি।  এ সকল কিছু ভালো ভাবে মানলে অবশ্যই দেশের যে কোনো জায়গায় নির্দিষ্ট কিছু জাতের  আপেল ফলানো সম্ভব **

Post a Comment

 
Top