GuidePedia

0
চুইঝালে গরুর মাংসের রেসিপি


খুলনাঞ্চলের মানুষ চুইঝাল ছাড়া মাংস রান্নার কথা ভাবতেই পারে না। কারণ চুইঝালের সুঘ্রাণ মাংসকে করে তোলে অতুলনীয় সুস্বাদু।

আজ আপনাদের জন্য সেই চুইঝালে গরুর মাংসের রেসিপি।  


উপকরণ: 

গরুর মাংস ১ কেজি, চুইঝাল(Chui Jhal – চুই ঝাল) মাঝারি টুকরা করে কাটা ২ কাপ, আলু স্লাইস ১কাপ, আদাবাটা ২ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরাবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, টকদই আধা কাপ, তেজপাতা ৪টি, দারচিনি ৪ টুকরা, এলাচ ৪টি, লবঙ্গ ৬টি, কাঁচা মরিচ ৫-৬টি, সরিষার তেল ১ কাপ, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরা ভাজা গুঁড়া আধা চা-চামচ, লেবুর রস-১ টেবিল চামচ, ধনে পাতা।


প্রণালী: 

মাংস ধুয়ে লবণ ও টকদই দিয়ে মেখে ১ঘণ্টা রাখুন। তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে তাতে সব মসলা কষিয়ে মাংস, চুইঝাল ও আলু দিয়ে কয়েকবার কষান।

পরে পানি দিন। মাংসের ঝোল শুকিয়ে তেলের ওপর এলে গরম মসলার গুঁড়া, জিরা ভাজা গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।



লাভজনক চুই ঝাল। আপনার বাগানে যেকোনো লম্বা গাছের গোড়ায়, বিল্ডিং এর সাথে, ছাদে লাগিয়ে চাষ করতে পারেন।
হাজার টাকা কেজি।





খুলনার ডুমুরিয়ায় 'চুই ঝাল' (লতা জাতীয় সবজি গাছ) চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক নবদ্বীপ মল্লিক। এ অঞ্চলে চুই ঝালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও চই ঝালের কাটিং (কলম) রফতানি করা হচ্ছে। এই সবজি বিক্রির জন্য কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। স্বল্প খরচ আর বেশি লাভ বলে স্থানীয় কৃষকরা চই চাষে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন।


ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া গ্রামের সুভাষ মল্লিকের ছেলে নবদ্বীপ মল্লিক প্রায় ১৮ বছর ধরে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। ২০১৫ সালে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রথম চই ঝাল চাষের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর তিনি সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ২০০ চই ঝালের কাটিং (কলম) সংগ্রহ করেন। পরবর্তী বছর কৃষক নবদ্বীপ নিজেদের ২০ শতাংশ জমিতে শুধু ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) 'নিজের তৈরি' এবং পিপি ছোট পলিথিনের প্যাকেটে ৭ হাজার কাটিং (কলম) তৈরি করতে সক্ষম হন। চই ঝাল চাষের জন্য কিছু সার, মাটি, শ্রমিকসহ এক একটি কাটিং (কলম) তৈরিতে তার খরচ হয় ৫ টাকা। মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে প্রতিটি কাটিং বিক্রি করা হয় ৩০ টাকা। মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে প্রতিটি কাটিং বিক্রি করে লাভ হয় ২৫ টাকা।


চই ঝাল লতাজাতীয় গাছ, চইয়ের কাটিং যে কোনো হালকা উঁচু জায়গায় গাছের গোড়ায় রোপণ করা যায়। খুব কম সময়ের মধ্যে চই গাছ অন্য গাছের সঙ্গে সহজে জড়িয়ে পুরো গাছ জুড়ে লতিয়ে যায়। বর্তমান নবদ্বীপের বাড়িতে শতাধিক গাছসহ বিভিন্ন টবে চই গাছ লতিয়ে আছে। চই গাছ রোপণে ২-৪ বছরের মধ্যে এর আকৃতি বিশাল হয়। একটি চই গাছের পুরো অংশ জুড়ে স্বাভাবিকভাবে এক থেকে দেড় মণ পর্যন্ত এর বিস্তার ঘটে, যা কয়েক লাখ টাকা বিক্রি সম্ভব। চই শিকড় থেকে কাণ্ড পর্যন্ত চড়া দামে বিক্রি করা যায়। বাজারে প্রতি কেজি চই ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।


কৃষিবিদদের মতে, চই ঝালের চাষ ও চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। চই মাংস, ডালসহ যে কোনো সবজির সঙ্গে ও 'চই ঝালের' ভর্তাও খাওয়া যায়। ৬-৭ বছর ধরে বিশেষ করে ডুমুরিয়া অঞ্চলে চই চাষ বেশ বেড়েছে। চই চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। এর রোগবালাই নেই বললেই চলে। দিন দিন এর চাহিদাও বাড়ছে। 


চুই লতাজাতীয় গাছ। এর কাণ্ড ধূসর এবং পাতা পান পাতার মতো সবুজ রঙের। এর কাণ্ড মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়। চই সাধারণত দুই প্রকার, গেছো ও ঝাড় চই। চই ঝালে দশমিক ৭ শতাংশ সুগন্ধি তেল রয়েছে। অ্যালকালয়েভ ও পিপালারটিন আছে ৫ শতাংশ। 



পরিমাণমতো গ্লুকোজ, ফ্রুস্টোজ, গ্লাইকোসাইডস, মিউসিলেজ, সিজামিন, পিপলাসটেরল ইত্যাদি রয়েছে চই ঝালে। এর কাণ্ড, শিকড়, পাতা, ফুল, ফল সব ভেষজ গুণসম্পন্ন। এর সব উপাদান মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শুধু তাই নয়, চই ঝালে গ্যাস্ট্রিক সমস্য, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। খাবারে রুচি, ক্ষুধামান্দ্যে কার্যকর ভূমিকাসহ চই ঝালে রয়েছে অসংখ্য গুণ। তবে মাটির গুণাগুণের কারণেও ডুমুরিয়া অঞ্চলে চই চাষ ভালো হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে চই চাষ লাভজনক। অনেকেই চিংড়ি ঘেরের বেড়িবাঁধে (আইলে) অবশিষ্ট জায়গায় 'ঝাড় চই' চাষ করে লাভবান হচ্ছে


(সংগৃহিত)

Post a Comment

 
Top